পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২০৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৮০
দ্বিতীয় ধর্ম্মমাণিক্য

ধর্ম্মমাণিক্য হাতী নজরানা পাঠাইতে বাধ্য ছিলেন। কিন্তু তিনি ইহাতে শৈথিল্য প্রদর্শন করিয়া কর প্রেরণ স্থগিত রাখিলেন। ইহাতে নবাবের বিরক্তির সঞ্চার হওয়া স্বাভাবিক। ধর্ম্মমাণিক্যের প্রতিনিধি মুর্শিদাবাদের নবাব দরবার হইতে পুনঃ পুনঃ এ বিষয় স্মরণ দিতে লাগিলেন কিন্তু মহারাজের চৈতন্য হইল না। এ বিষয় জানিতে পারিয়া নক্ষত্ররায়ের প্রপৌত্র জগৎরাম ঢাকার নবাবের নিকট দরবার সুরু করিলেন। তিনি বলিলেন যদি তাঁহাকে রাজাসনে বসাইয়া দেওয়া হয় তবে তিনি হস্তি-কর চুকাইয়া দিবেন। ইহাতে নবাব সম্মত হইয়া জগৎরামকে সৈন্য সাহায্য দিলেন, ধর্ম্মমাণিক্যের সহিত বল পরীক্ষা করিতে গিয়া জগৎরামের হার হইল। এ সংবাদ শুনিয়া নবাব অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইলেন ত্রবং নূরনগর ও গোমতী নদী এই দুই পথে দুই ফৌজ পাঠাইয়াছিলেন।

 নবাব সৈন্যের গতিরোধে অসমর্থ হইয়া ধর্ম্মমাণিক্য অরণ্যে গা ঢাকা দিলেন। এদিকে নবাবের সৈন্য উদয়পুর লুট করিয়া রাজমঙ্গল প্রভৃতি হস্তী লইয়া ঢাকা চলিয়া আসিল। রাজমালায় যুদ্ধের ফলে জগৎমাণিক্যের কি লাভ হইয়াছিল তাহার উল্লেখ নাই। কৈলাস সিংহ প্রণীত ইতিহাসে এইরূপ লেখা হইয়াছে—“ঢাকা নেয়াবতের সুবিখ্যাত দেওয়ান মির হবিব জগৎরাম ঠাকুরকে ‘রাজা জগৎমাণিক্য’ আখ্যা প্রদান পূর্ব্বক ত্রিপুরার রাজা বলিয়া প্রচার করেন। প্রকৃতপক্ষে কেবলমাত্র সমতলক্ষেত্র জগৎমাণিক্যের অধিকারভুক্ত হইয়াছিল।