পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২১৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৮৭
 

মুকুন্দমাণিক্য ও
ইন্দ্রমাণিক্য

সমগ্র ত্রিপুরা অধিকারে প্রয়াসী ছিলেন তখন ধর্ম্মমাণিক্য-তনয় গঙ্গাধর নায়েব নাজিমকে বশীভূত করিয়া একদল সৈন্যসহ কুমিল্লা নগরে উপস্থিত হইয়া নিজকে “উদয়মাণিক্য” রূপে ঘোষণা করেন। এইরূপে মুসলমানদের সহায়তায় ত্রিপুরা সিংহাসনের দাবীদার বাড়িয়া চলিল। জয়মাণিক্য পুনঃ ঢাকার নায়েব নাজিমকে বশীভূত করিবার জন্য ঢাকার জগৎমাণিক্যকে প্রলোভন দিয়া জানাইলেন যদি তিনি নায়েবকে বশে আনিতে পারেন তবে তাহার ভ্রাতা নরহরিকে যৌবরাজ্য দিবেন। ষড়যন্ত্র সিদ্ধ হইল, নায়েবের সাহায্যে জয়মাণিক্য উদয়মাণিক্যকে বিতাড়িত করিলেন এবং কথামত নরহরি যুবরাজ হইলেন। এইরূপে ত্রিপুরার সিংহাসন ঘেরিয়া রাজ্যলোভের অপূর্ব্ব লীলা চলিতে লাগিল। মুসলমানদের সহায়তায় আর একবার ইন্দ্রমাণিক্য সিংহাসনে বসিয়াছিলেন এবং জয়মাণিক্য কারারুদ্ধ হইয়াছিলেন। কিছুকাল পরে আবার ইন্দ্রমাণিক্য জয়মাণিক্যের চেষ্টায় সিংহাসন হারাইয়াছিলেন। ইন্দ্রমাণিক্য মুর্শিদাবাদে চলিয়া যান এবং সেখানে মৃত্যুমুখে পতিত হন। এ দিকে জয়মাণিক্যও কালপ্রাপ্ত হন। উভয়ের বিবাদ বিসম্বাদের উপর মৃত্যু যবনিকা টানিয়া দিল, স্বাধীনতার জ্যোতিও যেন ঘন মেঘে বিদ্যুৎ চমকের ন্যায় মিলাইয়া যাইতে লাগিল।