পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২২২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৯৪
সমসের গাজি

লইয়া গেলেন। বিজয়মাণিক্য আর ঢাকা হইতে ফিরিলেন না, সেখানেই তাঁহার মৃত্যু হইল।

  বিজয়মাণিক্য প্রবাসে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সমসেরের উন্নতশির আকাশে উঠিতে লাগিল। রাজার মৃত্যু সংবাদ পাওয়া মাত্র তিনি রাজকর বন্ধ করিয়া দিলেন এবং কাল বিলম্ব না করিয়া নিজকে চাকলে রোশনাবাদের অধিপতিরূপে ঘোষিত করিলেন। এতদিনে ফকিরের কথা সম্পূর্ণ সত্য হইতে চলিল। ত্রিপুর সিংহাসনের দিকে ক্রমেই তাঁহার লুব্ধ দৃষ্টি পড়িতে লাগিল।

 বিজয়মাণিক্যের মৃত্যুতে ত্রিপুর সিংহাসন শূন্য হইয়া পড়িয়াছিল। ইন্দ্রমাণিক্যের অনুজ যুবরাজ কৃষ্ণমণির পরিচয় পূর্ব্বে দেওয়া হইয়াছে, অদৃষ্টের বিড়ম্বনায় তিনি হেড়ম্ব রাজ্যে আশ্রয় লইয়াছিলেন। এই সুযোগে তিনি ত্রিপুর প্রজার আহ্বানে স্বরাজ্যে প্রত্যাবর্ত্তন করেন, সিংহাসনে বসিবার পক্ষে রাজ্যের ভিতরে কোন অন্তরায়ই ছিল না কিন্তু বাহিরে প্রবল বৈরী সিংহনাদ করিতেছিলেন। সমসের যখন শুনিলেন যুবরাজ কৃষ্ণমণি রিয়াঙ্গ অঞ্চলে সৈন্যসহ অগ্রসর হইয়াছেন তখন বিদ্যুদ্বেগে তাঁহার গতিরোধ করিতে সমসের কাল বিলম্ব করিলেন না। সমসেরের দৈব তরবারীরই জয় হইল, কৃষ্ণমণি পরাভূত হইয়া অরণ্যমধ্যে গা ঢাকা দিলেন। রাজধানী উদয়পুর সমসেরের হস্তগত হইল, সমসের এখন ত্রিপুরার অধিপতি।