পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৩১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২০৩
কৃষ্ণমাণিক্য

সাহেবকে যুদ্ধোপকরণ দিয়া কৃষ্ণমাণিক্যের বিরুদ্ধে সত্বর পাঠাইয়া দিলেন। এইভাবে হৃতবল ত্রিপুরার সহিত ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের সঙ্ঘর্ষ উপস্থিত হইল। ইংরেজ সৈন্যের গতিরোধ করিতে কৃষ্ণমাণিক্য প্রাচীন কৈলাগড় দুর্গে সাত হাজার সৈন্য ও কতকগুলি তোপসহ প্রস্তুত হইলেন। ইংরেজ সৈন্যের সংখ্যা ছিল মাত্র ২০৬। এমতাবস্থায় যুদ্ধে মহারাজের সুবিধা হইবারই কথা ছিল কিন্তু পলাশীর রণাঙ্গনে যেমন বিশ্বাসঘাতকতার অভিনয় পাওয়া যায় এখানেও সেই দৃশ্য ঘটিয়াছিল। ত্রিপুর সৈন্যের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করিয়া এইরূপ বলা হইল, আর রক্ষা নাই—পর্ব্বতে পলায়নই একমাত্র কার্য্য। রণক্ষেত্র হইতে সহসা ত্রিপুর সৈন্য হঠিয়া গেল, কে যে কোথা হইতে যুদ্ধের অবস্থা এইভাবে শোচনীয় করিয়া তুলিল মহারাজ ভাল করিয়া বুঝিয়া উঠিতে পারেন নাই। কিন্তু যখন অবস্থা হৃদয়ঙ্গম করিলেন তখন ইংরেজসৈন্য তাঁহাকে ঘিরিয়া ফেলিয়াছে। বাঙ্গালার নবাবের ন্যায় ত্রিপুরার মহারাজ ইংরেজ শক্তির কবলে আসিয়া পড়িলেন, রেসিডেণ্টরূপে লিকসাহেব নিযুক্ত হইলেন, ইনিই ত্রিপুরার সর্ব্বপ্রথম রেসিডেণ্ট।

 ইহার কিছুকাল পরে ব্রিটিশ কর্ত্তৃপক্ষ জগৎমাণিক্যের পুত্র বলরামমাণিক্যকে চাকলে রোশনাবাদের অধিপতি করিয়া দেন। ইহাতে কৃষ্ণমাণিক্যের হৃতশক্তি আরও খর্ব্ব হইয়া পড়িল কিন্তু এ ব্যবস্থা দীর্ঘকাল স্থায়ী হয় নাই। বলরামমাণিক্যকে দূর করিয়া কৃষ্ণমাণিক্য পুনঃ চাকলে রোশনাবাদের অধিকার প্রাপ্ত