পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৪১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২১৩
দুর্গামাণিক্য

ক্ষমতা প্রাপ্ত ম্যানেজার হইলেন। মহারাজ রামগঙ্গা ইহার বিরুদ্ধে আপিল করিলেন কিন্তু কোন ফল হইল না।

 ১৮০৯ খৃষ্টাব্দে (১২১৯ ত্রিপুরাব্দে) যুবরাজ দুর্গামণি চাকলে রোশনাবাদের অধিকার প্রাপ্ত হন। তৎপর তিনি ত্রিপুরার সিংহাসনে দুর্গামাণিক্য নামে অভিষিক্ত হন।

 সিংহাসনচ্যুত রামগঙ্গামাণিক্যের জীবন বড়ই দুঃখময় হইয়া উঠিল। তিনি নানাস্থান ঘুরিয়া অবশেষে বিশগ্রামে বসতি স্থাপন করেন। ভ্রাতা কাশীচন্দ্র এ দুঃসময়ে তাঁহার সহচর হইয়াছিলেন।

 দুই বৎসর রাজত্ব করিবার পর দুর্গামাণিক্য তীর্থ দর্শনের জন্য চঞ্চল হইয়া উঠিলেন। হয়ত সংসারের অনিত্যতায় এবং অচিরে নিজ মৃত্যুর বিষয় ভাবিয়া তীর্থের জন্য তাঁহার মন ব্যাকুল হইয়া উঠিয়াছিল। অগ্রহায়ণ মাসে যাত্রার দিন ধার্য্য হইল। রাজ্য ত্যাগ করিয়া যাইবার পূর্ব্বে রামগঙ্গামাণিক্যের সহিত সাক্ষাৎ করিতে ইচ্ছুক হইয়া প্রবাসে তাঁহার নিকট সংবাদ পাঠাইলেন। রামগঙ্গামাণিক্য সংবাদ পাইয়া দুর্গামাণিক্যের সহিত সাক্ষাৎ অভিলাষে সত্বর চলিয়া আসিলেন, উভয়ের মনোমালিন্য যেন কোন্ মন্ত্রবলে দূর হইয়া গেল!

 গোমতীর মোহনায় উভয়ের সাক্ষাৎ হইল। দুর্গামাণিক্য রামগঙ্গামাণিক্যকে অতি সাদরে গ্রহণ করিলেন এবং অত্যন্ত বিনয়পূর্ব্বক বলিলেন “তীর্থযাত্রা করিয়া বাহির হইয়া আসিয়াছি, এ রাজ্যে আর ফিরিব কিনা কে জানে?