পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৪৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২২০
রামগঙ্গামাণিক্য

এখন চৌরজিৎ, মারজিৎ ও গম্ভীরসিংহ তিন ভাই-ই হেড়ম্বরাজ্যে প্রজাভাবে কাল কাটাইতে লাগিলেন!

 হেড়ম্বরাজ গোবিন্দচন্দ্র ইহাদের প্রতি কৃপাপূর্ব্বক আতিথ্য প্রদান করেন। কিন্তু ইহারা ষড়যন্ত্র করিয়া সহসা রাজ ক্ষমতা অধিকার করিয়া মহারাজ গোবিন্দচন্দ্রকে তাড়াইয়া দেন। এইবার ব্রহ্মসৈন্য হেড়ম্বরাজ্য ঘিরিয়া ফেলিল, তখন চৌরজিৎ, মারজিৎ ও গম্ভীরসিংহ শ্রীহট্টে আসিয়া কোম্পানীর শাসনে বাস করিতে লাগিলেন। ক্রমে ব্রহ্মসৈন্যদের সহিত ইংরেজশক্তির সঙ্ঘর্ষ উপস্থিত হইল, এই যুদ্ধে রামগঙ্গামাণিক্য ইংরেজদিগকে যথাশক্তি সাহায্য করেন।

 মহারাজ রামগঙ্গামাণিক্য অত্যন্ত ধর্ম্মপ্রাণ ছিলেন এবং নিতান্ত অনাড়ম্বর জীবনযাপন করিতেন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অভ্যন্তরে ত্রিপুরা মহারাজের অত্যুজ্জ্বল কীর্ত্তি হইতেছে গোপীনাথ মন্দির। গোপীনাথের নাটমন্দির ভগ্ন দশা প্রাপ্ত হইয়াছিল, মহারাণীর প্রযত্নে উহার সংস্কার সাধন হয়। শুনিয়াছি ঐ নাটমন্দির পুনঃ ভগ্নদশায় আসিয়াছে এবং অচিরে সংস্কার আবশ্যক। গোপীনাথের সেবার জন্য উড়িষ্যা দেশে দেবোত্তর সম্পত্তি ক্রয় করিয়া পাণ্ডার অধিকারে রাখা হইয়াছে। গোপীনাথের মন্দির ত্রিপুরারাজ্যের শির বঙ্গের বাহিরে উন্নত করিয়া রাখিয়াছে।

 শেষ জীবনে রাজধর মাণিক্যের পত্নী চন্দ্ররেখা বৃন্দাবনে বাস করিতে থাকেন এবং কালক্রমে ধাম প্রাপ্ত হন।