পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৬৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৩৬
রাজ্যশাসনে বীরচন্দ্র

করিলেন। সেখানে বীরচন্দ্রেরই জয় হইল। অতঃপর ১৮৬৯ খৃষ্টাব্দে এই মামলা প্রিভিকৌন্সিলেও গিয়াছিল কিন্তু হাইকোর্টের ডিক্রিই অক্ষুণ্ণ রহিল।

 তখন বীরচন্দ্র অভিষেক ক্রিয়ার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করিলেন। গভর্ণমেণ্ট হইতে তাঁহাকে খিলাত ও সনন্দ প্রদান করা হয়। ১৮৭০ খৃষ্টাব্দে (১২৭৯ ত্রিপুরাব্দে, ২৭শে ফাল্গুন) মহা সমারোহে বীরচন্দ্রের অভিষেক সম্পন্ন হয়। তৎপরবর্ত্তী বর্ষে (১২৮০ ত্রিপুরাব্দে) ১৬ই ভাদ্র বীরচন্দ্রমাণিক্য স্বীয় জ্যেষ্ঠপুত্র কুমার রাধাকিশোরকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করেন। মহারাজ রামমাণিক্য হইতে বড়ঠাকুর পদ সৃষ্ট হয়, সেই হইতে বড়ঠাকুর পদের জন্য নানা বিড়ম্বনার সূত্রপাত ঘটিয়াছে, রাজার উত্তরাধিকার নির্ব্বাচনে ইহা দ্বারা জটিলতা এত বাড়িবে জানিলে রামমাণিক্য হয়ত ইহার প্রবর্ত্তন করিতেন না। রাধাকিশোর যৌবরাজ্য লাভ করায় নবদ্বীপচন্দ্র মনঃক্ষুণ্ণ হইয়া তদীয় মাতা সহ কুমিল্লা চলিয়া আসেন, ইহার কিছুকাল পূর্ব্বে ঈশানচন্দ্রের জ্যেষ্ঠ তনয় ব্রজেন্দ্রচন্দ্র পরলোক গমন করেন। অতঃপর নবদ্বীপচন্দ্রের জন্য মাসিক ৫২৫৲ টাকা বৃত্তি নির্দ্ধারিত হয়।

 বীরচন্দ্র মাণিক্যের শাসন কালে ত্রিপুরা রাজ্য প্রাচীন যুগের শাসন পদ্ধতির ছাপমুক্ত হইয়া বর্ত্তমান ব্রিটিশ তন্ত্রে অনুপ্রাণিত হইয়াছে। তাঁহারই সময় সতীদাহ নিবারিত হয়।