পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২৯১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
২৫৭
বীরেন্দ্রকিশোর

ইহা এক পলকে চোখে ঠেকিয়া যায়। রবীন্দ্রনাথ একবার সেই শৈলভবনে ছিলেন, ইহার উদয়াচল ও অস্তাচল পর্ব্বতদ্বয়ের মনোরম শোভায় তিনি মুগ্ধ হন। শুনিয়াছি তিনি নাকি শান্তিনিকেতনে তাঁহার পৃথিবীব্যাপী প্রকৃতির লীলা-নিকেতন দর্শন প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন—পৃথিবীতে প্রকৃতির লীলাক্ষেত্র অনেক দেখিয়াছি কিন্তু ঐ ত্রিপুরার কুঞ্জবনের শৈল শ্বেতভবন আমার স্মৃতি হইতে মলিন হইতে পারিতেছে না।

 মহারাজ যখন রাজকার্য্যে ক্লান্ত হইতেন আকবরের শিক্রীবাসের ন্যায় তিনি কখনো কখনো বন-বাস করিতে এখানে চলিয়া আসিতেন। প্রকৃতির মধুময় নিবিড় বেষ্টনে থাকিয়া সংসারের তাপ ভুলিয়া যাইতেন। তাঁহার অঙ্কিত ছবিগুলি উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ আলো করিয়া রহিয়াছে, যে কোন খ্যাতনামা চিত্রশিল্পীর রচনার পার্শ্বে ইহারা আপন আসন করিয়া লইতে পারে। চিত্র সাধনার সহিত চলিত সঙ্গীতচর্চ্চা—বাদ্যযন্ত্রে তাঁহার অতুলনীয় প্রতিষ্ঠা লাভ ঘটিয়াছিল। বীরচন্দ্রের হাত তাঁহার মধ্যে আত্মপ্রকাশ করিতে দেখা যাইত। তাঁহার মন্দ্রিত বাঁশী রেকর্ডে উঠিয়াছিল শুনিয়াছি কিন্তু ইহার প্রচার নিশ্চয়ই নিষিদ্ধ হইয়া যায়।

 এই সকল বিধিদত্ত গুণে ভূষিত হইয়া তিনি যে প্রকৃতির ললাট সৌন্দর্য্য একা পান করিতেন এমন নহে কিন্তু বসন্ত উৎসবচ্ছলে কুঞ্জবনে মহা সমারোহের ঘটা পড়িয়া যাইত। প্রকৃতিপুঞ্জকে মিষ্টিমুখ করাইবার জন্য সন্দেশ রসগোল্লার রসাল

 ১৭