পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৪১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৩
দৈত্যের বানপ্রস্থ

হইবে সেদিকে তাঁহার দৃষ্টি সর্ব্বদা ছিল। অনেক দিন পরে তাঁহার ত্রিপুর নামে এক পুত্র জন্মগ্রহণ করিল। ত্রিপুরের জন্মে রাজ্যে আর আনন্দ ধরে না। সকলের চক্ষুর মণিস্বরূপ হইয়া ত্রিপুর বাড়িতে লাগিল। কিন্তু এত আদর এত ভালবাসার মধ্যেও ত্রিপুরের স্বভাব কোমল হইল না। বয়সের সঙ্গে ত্রিপুরের চরিত্র ঘোরতর দুর্দ্দান্ত হইয়া উঠিল। ইহাতে সকলে প্রমাদ গণিল। হায়! হায়! এমন সাধু রাজার ছেলে এরূপ অসাধু হইল কেন?

 ইহার কারণ অনুসন্ধানে মহারাজ দৈত্য দেখিলেন এই কিরাত দেশে বাস করিয়াই ত্রিপুরের মতি গতি বিকৃত হইয়াছে। তাঁহার বড়ই খেদ হইল—মহারাজ যযাতির রাজ্যের উত্তম গঙ্গা যমুনার মধ্যভাগ যাহা ‘আর্য্যাবর্ত্ত’ নামে প্রসিদ্ধ তাহা হইতে পিতার শাপে বহিষ্কৃত হওয়াতেই এই দুৰ্গতি। যদি দ্রুহ্যু সে দেশে বাস করিবার অনুমতি পাইতেন তবে আজ এই পুত্র লইয়া দৈত্যের এত দুৰ্গতি ভুগিতে হইত না। সেই পুণ্যদেশের স্মৃতি দৈত্যের মনকে পীড়া দিতে লাগিল। এই গঙ্গা যমুনা আশ্রিত দেশ গুলি সত্যই ত্রৈলোক্যদুর্ল্লভ–হরিদ্বার, কুরুক্ষেত্র, মথুরা, কাশী কত না তীর্থ বিরাজিত। দৈত্যের চোখে জল ঝরিতে লাগিল। এই পুণ্যভূমিতে জন্মাইবার জন্য দেবতারাও বাঞ্ছা করেন এবং স্বর্গ ছাড়িয়া মর্ত্ত্যে আসেন। এইসব তীর্থের নাম প্রভাতে জাগিয়া স্মরণেও পাপ নষ্ট হয় এবং অন্তকালে পরম পদ লাভ হয়। ত্রিপুর কিরাত দেশে জন্মিয়া এসব কিছুই