পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৪৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
২১

ত্রিপুরা নামের হেতু ও
ত্রিপুর রাজচিহ্ন

আসন। মহারাজ ত্রিলোচনের রাজ্যাভিষেক কালেও সিংহাসন ছিল, শ্রীরাজমালায়ই তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। ষোলটি সিংহের মধ্যে প্রকৃতপক্ষে অষ্টকোণে সংস্থাপিত আটটি সিংহ কর্ত্তৃক উক্ত সিংহাসন ধৃত হইয়াছে—ক্ষুদ্রাকারের অপর আটটি সিংহ উপলক্ষ্য মাত্র।

 এই সিংহাসন অনেকবার সংস্কৃত হইয়া থাকিলেও প্রাচীন উপকরণ যতদূর সম্ভব স্থিরতর রাখা হইয়াছে। ত্রিপুরেশ্বরগণ রাষ্ট্রবিপ্লবে বিধ্বস্ত হইয়া সময় সময় রাজপাট পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হইলেও সিংহাসন এবং চতুর্দ্দশ দেবতা কোন কালেই পরিত্যাগ করেন নাই, সর্ব্বদাই সঙ্গে সঙ্গে রাখিতেন এবং তাহা অসম্ভব হইলে বিশ্বস্ত পার্ব্বত্য প্রজার আলয়ে গচ্ছিত রাখিতেন। কোন কোন সময় সিংহাসন, নিভৃত গিরিনির্ঝরিণীতে নিমজ্জিত করিয়া রাখিবার কথাও শুনা যায়। এই কারণে সমসের গাজী উদয়পুরের রাজধানী অধিকার করিয়াও সিংহাসন না পাওয়ায় বাঁশের সিংহাসন নির্ম্মাণ করাইয়া ‘লক্ষ্মণমাণিক্যকে’ সিংহাসনে স্থাপন করিয়াছিলেন।

 যুধিষ্ঠির রাজসূয় যজ্ঞকালে ত্রিপুরেশ্বরকে বর্ত্তমান সিংহাসন প্রদান করেন, ত্রিপুরা রাজ্যে এইরূপ প্রবাদ আছে। সিংহাসন সম্মুখে প্রতিদিন চণ্ডীপাট এবং যথানিয়মে উক্ত আসনের অর্চ্চনা হয়। তৎসহ কতিপয় শালগ্রামচক্রও অর্চ্চিত হইয়া থাকেন।[১]

  1. স্বর্গীয় কালীপ্রসন্ন বিদ্যাভূষণ মহাশয়ের রাজচিহ্ন প্রবন্ধ হইতে সংগৃহীত।