এইরূপে মহা ধূমধামে ত্রিলোচনের বিবাহ সমাপ্ত হইল। ত্রিপুররাজ্য এতদিনে লক্ষ্মীযুক্ত হইল, গাছে গাছে ফুল ফুটিল, ক্ষেতে ফসল হইল, প্রজার সকল কষ্ট দূর হইল—দুঃখের দিন কাটিয়া গেল। সকলের মুখেই হাসি, দুঃখের রাত্রি প্রভাত হইয়াছে, সোনার সূর্য্য উঠিয়াছে। এমনিভাবে কয়েক বছর কাটিয়া গেল, শুভদিনে রাজ-রাণী এক পুত্র প্রসব করিলেন। হেড়ম্বরাজ এই সংবাদ শুনিয়া পরমানন্দ পাইলেন—আমার পুত্র নাই, এত বড় রাজত্ব কে ভোগ করিবে? এদিকে আমার আয়ু ত প্রায় ফুরাইয়া আসিয়াছে। যাক্ বিধাতা মুখ তুলিয়। চাহিয়াছেন, এই দৌহিত্রই হইবে আমার উত্তরাধিকারী। একেই আমি এ রাজসিংহাসনে বসাইব।
যেমন চিন্তা তেমনি কাজ। হেড়ম্বরাজ নাতি দেখিতে চাহিলেন। কুমারকে লইয়া ত্রিপুরবাহিনী হেড়ম্বরাজ্যে পৌঁছিল। কুমারের থাকার জন্য পাকাপাকি ব্যবস্থা হইল, কুমার দিনে দিনে হেড়ম্বরাজ্যে বাড়িতে লাগিলেন। সে দেশ এমনি তাঁহার গা-সহা হইল যেন জন্মভূমি আর ত্রিপুরা রাজ্য না দেখিতে দেখিতে ইহা হইয়া পড়িল দূরের দেশ। এইভাবে হেড়ম্বরাজের মনের ইচ্ছা পূরণ হইল। হেড়ম্বরাজ্যের ভাবী রাজা হইয়া কুমার ক্রমেই বড় হইতে লাগিলেন।