পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
৩৫

বরবক্রে ত্রিপুর রাজধানী
স্থানান্তর

 খলংমা নদীর তীরে দাক্ষিণ রাজত্ব করিতে লাগিলেন, এস্থানে আসিয়া তাঁহারা পূর্ব্ব-সমাজ হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িলেন। এতকাল বসবাসে সে স্থান উন্নত হইয়াছিল, আচার নিষ্ঠা মার্জ্জিত হইয়াছিল। সেই স্থান হেড়ম্বরাজ লইয়া গেলেন। সুতরাং নূতন দেশে অসংস্কৃত আচারের মধ্যে পুনরায় আসিয়া পড়িলেন, ইহা যেন বনবাসের মত ঠেকিতে লাগিল। এখানে আসিয়া পাত্র মিত্র লইয়া দাক্ষিণ রাজঠাট বসাইলেন সত্য কিন্তু তাঁহার মন মিশিল না। তাঁহার কুলে মদ্যাদি অনাচার ঢুকিতে লাগিল এবং পানাসক্ত হইয়া ইহারা আত্মকলহে রত হইল। পরস্পর বিবাদ, ক্রমে তুমুল রণে পরিণত হইল, মহারাজ দাক্ষিণ সে কলহ থামাইতে বৃথাই চেষ্টা পাইলেন। ফলে পঞ্চাশ হাজার ত্রিপুরবীর সেই গৃহবিবাদে প্রাণ হারাইল। মহারাজ দাক্ষিণ ভাবিলেন—এ কেমন স্থানে আসিলাম, আমার স্বজন যেন যদুবংশের ন্যায় ধ্বংস হইয়া গেল! হায়, হায়, একি হইল! এইসব দুশ্চিন্তায় খলংমা দেশ ত্যাগ করিতে ইচ্ছা করিলেন কিন্তু তাঁহার আয়ু ফুরাইয়া আসিয়াছিল। প্রায় সমস্ত জীবন ঝড়ঝঞ্ঝায় কাটাইয়া দাক্ষিণ মরিয়া শান্তি পাইলেন।

 দাক্ষিণের পর তাঁহার ৫২ম পুরুষ পর্য্যন্ত খলংমাতেই রাজত্ব করেন। এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোন ঘটনার কথা পাওয়া যায় না। ইহা যেন যুরুপীয় ইতিহাসের Dark Age অন্ধকারযুগের ন্যায়। তাঁহার ত্রিপঞ্চাশত্তম পুরুষ বিমারের পুত্র কুমার পরম ধার্ম্মিক রাজা ছিলেন। তিনি