পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৭৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৫১

ত্রিপুররাজ ও গৌড়ের
নবাব

ধনবান্ জমিদার ত্রিপুরেশ্বরের অধিকার সান্নিধ্যে বাস করিতেন। হীরাবন্ত গৌড়ের নবাব হইতে মেহেরকুলের[১] সনদ পাইয়া কর্ত্তৃত্ব করিতেন এবং নবাবকে সেজন্য করের পরিবর্ত্তে এক নৌকা বহু মূল্য দ্রব্য উপহার দিতেন। ত্রিপুররাজ এই কথা জানিতে পারিলেন এবং যখন বুঝিতে পারিলেন এই সব মূল্যবান্ ধনরত্ন ত্রিপুরা রাজ্য হইতেই সংগ্রহ করিয়া নবাবকে নজর পাঠান হইতেছে, তখন তাঁহার বড়ই ক্রোধ হইল। হীরাবন্ত ত্রিপুরেশ্বরকে অবজ্ঞা দ্বারা এই ক্রোধ আরও বাড়াইলেন। তখন একদিন সহসা ত্রিপুর সৈন্য মেহেরকুল আক্রমণ করিয়া ইহার সর্ব্বস্ব লুটিয়া লইল। হীরাবন্ত এইরূপে পরাস্ত হইয়া গৌড়ের নবাবের নিকট ধন্না দিয়া পড়িলেন। হীরাবন্ত নৌকা বোঝাই রত্ন দিয়া নবাবকে খুসী করিয়াছিলেন, এখন সে রত্ন ত্রিপুর-রাজ নিজভাণ্ডারে লইয়া আসিলেন। হীরাবন্ত বুঝাইলেন নবাবের রাজস্বের উপর ত্রিপুরেশ্বরের লোভ হেতু ত্রিপুরা রাজ্য শীঘ্রই আক্রমণ করা উচিত।

 নবাব সম্মত হইলেন। ত্রিপুররাজের সহিত প্রবল প্রতাপ গৌড়ের নবাবের যুদ্ধ বাঁধিয়া গেল। যখন নবাবের প্রায় ২।৩ লক্ষ্য সৈন্য আসিয়া ত্রিপুর সীমান্তে হানা দিল তখন ত্রিপুররাজ ভয় পাইলেন। তিনি অন্য উপায় না দেখিয়া সন্ধির পরামর্শ

  1. মেহেরকুল পরবর্ত্তী কালে একটী পরগণায় পরিগণিত হয়, কমলাঙ্ক বা কুমিল্লা ইহারই অন্তর্গত।