পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৮০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৫২

ত্রিপুররাজ ও গৌড়ের
নবাব

করিতে লাগিলেন। রাজার এই ভীরুতার কথা রাজরাণীর কাণে গেল। মহাদেবী ক্রোধে জ্বলিয়া উঠিলেন—“হে নরনাথ, তুমি একি কথা কহিতেছ? পূর্ব্বপুরুষের কীর্ত্তি লোপ করিতে চাও? ছি! ছি! যদি নবাবের সৈন্য দেখিয়া ভয় পাঠয়া থাক তবে অন্তঃপুরে আরামে বাস কর, আমি রণে ঝাঁপাইয়া পড়ি।” এই বলিয়া রাণী দামামা বাজাইলেন, সৈন্যেরা সব সারি দিয়া দাঁড়াইল। “কি বল ত্রিপুর সৈন্যগণ, তোমরা কি যুদ্ধ চাও, না চাও না? তোমাদের রাজা সিংহের কুলে শৃগাল হইয়া জন্মিয়াছে। ভয়ে ঘরের কোণে লুকাইয়া থাকিতে চায়। রাজা ভয়ে ভীত হউক আমি ভয় করি না। কুলের মান রাখিতে আমি যুদ্ধে যাইব। তোমাদের প্রাণে যদি তিল মাত্র বল থাকে তবে আমার সঙ্গে চল।” রাণীর বচনে সৈন্যদের হৃদয়ে বল বাড়িল। সকলে সমস্বরে বলিয়া উঠিল, “আমরা ভয় করি না মা,—আমরা ভয় করিনা, তুমি মা হইয়া যদি যুদ্ধে চল আমরা সন্তান হইয়া তোমার পেছনে যাইব।”

 রাণীর আনন্দের সীমা রহিল না। রণরঙ্গিনী মূর্ত্তিতে তিনি ভয়ভৈরবী মূর্ত্তি ধরিলেন। যুদ্ধে[১] যাইবার পূর্ব্বদিন তিনি

  1. The women……in daring and moral prowess remind one of the females in Rajputana or of the Maharatta Country. —Rev. Long—Asiatic Society Journal.
     উক্ত রাণীর তরবারি আজও আগরতলায় দেবালয়ে পূজিত হইতেছে।