পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৮২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৫৪

ত্রিপুররাজ ও গৌড়ের
নবাব

অন্নপূর্ণা হইয়া সকল সৈন্যকে তৃপ্তিমত ভোজন করাইলেন। পরদিন দেশের স্বাধীনতার জন্য হস্তিপৃষ্ঠে চড়িয়া অগণন সৈন্যসহ যুদ্ধ যাত্রা করিলেন। তালে তালে রণ দামামা বাজিতে লাগিল, ত্রিপুরা রাজ্যের সে এক দিন! ত্রিপুরেশ্বর এই সব দেখিয়া কি ভাবে বসিয়া থাকেন, তিনিও সৈন্যের সহিত যোগ দিলেন।

 অতঃপর দুই সৈন্যের ভেট হইল, মহাযুদ্ধ বাঁধিয়া গেল। ত্রিপুর কুললক্ষ্মী যুদ্ধে অবতীর্ণ হইয়াছেন, কুলদেবতা চৌদ্দদেবতার আশীর্ব্বাদ বর্ষণ হইল। গৌড়ের সৈন্য ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িতে লাগিল। এমন সময় ত্রিপুররাজ আকাশে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখিলেন। তখন সন্ধ্যা হয় হয়, ধূসর আকাশে এক নরমুণ্ড নাচিতেছে। মহারাজ দেখিলেন, সৈন্যেরাও দেখিল—দেখিয়া সকলে ভয়ে শিহরিয়া উঠিল। মহারাজ অমঙ্গল আশঙ্কায় রামকৃষ্ণ নারায়ণ স্মরণ করিলেন। এইরূপ প্রবাদ আছে যে লক্ষ্য সৈন্য হত হইলে আকাশে নরমুণ্ড ধেই ধেই করিয়া নৃত্য করে। তখন মহারাজ বুঝিলেন এই যুদ্ধে লক্ষ লোক হত হইয়াছে। রণশ্রান্ত হইয়া তিনি বসিতে চাহিলে তাঁহার জামাতা আসন না পাইয়া মৃত হস্তীর দাঁত তুলিয়া আনিয়া বসিতে দিলেন। এদিকে সন্ধ্যা হইয়া গেল, গৌড়ের সৈন্য রণে ভঙ্গ দিয়া যে যার পথ দেখিল। ত্রিপুরেশ্বরের বিজয় কেতন উড়িল। রাণী জয়মাল্য পরিয়া যুদ্ধক্ষেত্র হইতে স্বদেশে ফিরিলেন। হীরাবন্তের অধিকৃত মেহেরকুল ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্গত হইল, অদ্যাবধি এই স্থান ত্রিপুরার রাজ্যভুক্ত রহিয়াছে। ভারত