পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৮৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৫৯

গৌড়েশ্বরের দরবারে
ত্রিপুরকুমার রত্ন

নীচে যে ঘুঘুরা কীট থাকে তাহা খুঁড়িয়া তুলিয়া তৃপ্তিতে আহার করে, একি সত্য?” কুমার নবাবকে কুর্ণিশ করিয়া বলিলেন—“একথা সত্য হইতে পারে কিন্তু তাতে কি আসে যায়? আপনার রাজ্যে কত জাতির লোক আছে তাদের মধ্যে কেউ যদি এমন কিছু খায় তাতে গৌড়ের নবাবের গায়ে ত সে দোষ লাগে না, নবাবের আচার ব্যবহার তাতে কি অশুদ্ধ হয়? আমাদের ত্রিপুরা রাজ্য যেমনি বড় তেমনি তাতে অনেক জাতির বাস, খাওয়া পরা রুচির বিষয়, এতে হাত দেওয়া কি রাজার উচিত?” গৌড়েশ্বর রত্নের আলাপনে বড়ই প্রীত হইলেন!

 একদিন রত্ন দরবারে আসিয়াছেন, সেদিন সোমবার বড় সকাল আসিয়াছেন। তখনও দরবার বসে নাই তাই রত্ন বাহিরে প্রতীক্ষা করিতেছেন। গৌড়েশ্বরের প্রাসাদের সিঁড়িতে পায়চারি করিতেছেন এমন সময় দেখিলেন চৌদোলে চড়িয়া এক পরম সুন্দরী রমণী নবাবের প্রাসাদ পথে যাইতেছেন, তাঁহার পেছনে আরও এইরূপ জন কয়েক সুন্দরী ছিল। ইহাদের পরণে সোণার কাপড়, মাথায় সোণার ঝালর ছাতি, সঙ্গে নবাবের লোক লস্কর। এই আশ্চর্য্য রূপযাত্রা দেখিতে যখনই কৌতূহলে লোকের ভিড় হইতেছে অমনি ছড়িদার ছড়ি ঘুরাইয়া লোকজন হঠাইয়া দিতেছে। এই সব সাজসজ্জা লোক লস্কর দেখিয়া রত্নের মনে হইল, চৌদোল রমণী গৌড়েশ্বরের কোন এক মহিষী হইবেন এবং সঙ্গের নারীগণ হয়ত তাহার সেবিকা হইবে। যখন চৌদোল রত্নের সম্মুখে আসিয়া পড়িল তখন রত্ন ঢিপ্ করিয়া