পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৮৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৬১

গৌড়েশ্বরের দরবারে
ত্রিপুরকুমার রত্ন

লোকজন রত্নকে প্রণাম করিতে দেখিয়া হু হু করিয়া হাসিয়া উঠিল। এই হাস্যকর ঘটনা দরবারী কাহারও কাহারও চোখ এড়াইলনা এবং ক্রমে গৌড়েশ্বরের কানে পৌঁছিতেও বিলম্ব হইল না।

 যখন দরবার সুরু হইল, রত্ন তাঁহার নির্দ্দিষ্ট আসনে বসিলেন। নবাব রসিকতা করিয়া প্রশ্ন করিলেন—“ওহে ত্রিপুর কুমার, তোমার ভক্তির কথা শুনিয়া ত আমরা অবাক হইয়াছি। তুমি নাকি নর্ত্তকীকেও প্রণাম কর, কথাটা কি ঠিক?” অবশ্য পূর্ব্ব হইতেই লোকজনের হাস্য দেখিয়া রত্নের সন্দেহ হইয়াছিল, এইবার পরিষ্কার সেই রমণী কে চিনিলেন। কিন্তু রত্ন মুখের রঙ না বদলাইয়া নির্ভীক ভাবে কহিলেন—“নবাবের মহিষী ভ্রমে ইহাকে প্রণাম করিয়াছি, ইহাতে ক্রটি হইয়া থাকিলে সে ক্রটি ভুলের, আমার নহে।” রত্নের এই উত্তর শুনিয়া দরবারীগণের রসিকতার সুযোগ ত ঘটিলইনা পরন্তু তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ ভয়ে জড় সড় হইয়া পড়িল পাছে বা নবাব রাগ করেন! কিন্তু নবাব কুমারের সরলতা দেখিয়া মুগ্ধ হইয়া গেলেন। এইভাবে গৌড়েশ্বরের দরবারে কুমার রত্নের খ্যাতি ও মান দিন দিন বাড়িতে লাগিল!