পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/৯৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৬৫
ধর্ম্মমাণিক্য ও রাজমালা

বিন্দু মাত্র টান নাই।” কুমার জিজ্ঞাসা করিলেন—“কেন কি হইয়াছে?” তাহারা বলিল—“তোমার পিতা মহামাণিক্য স্বর্গীয় হইয়াছেন, এ দিকে তোমার চারি ভাই সকলেই সিংহাসন চান, সেনাপতিরাও স্ব স্ব প্রধান, তারাও রাজা হইতে চায়, এইভাবে রাজ্যে ঘোর অশান্তি। পাত্র মিত্র সব মন্ত্রণা করিয়া আমাদিগকে তোমাকে খুঁজিতে পাঠাইয়াছে, এখন তুমি যদি রাজ্যে ফিরিয়া আস তবেই সব দিক রক্ষা হয় নতুবা ত্রিপুরা রাজ্যে রক্তনদী বহিয়া যাইবে। ত্রিপুরাকে শ্মশান করিতে চাও, না দেশে দেশে সন্ন্যাসী হইয়া ফিরিতে চাও?”

 কথাগুলি একতিলও মিথ্যা নহে, তবে ত কনোজী ব্রাহ্মণ ঠিকই বলিয়াছেন যে রাজমুকুট আমার জন্য অপেক্ষায় আছে! এ ব্রাহ্মণ মনুষ্য না দেবতা! এইরূপ চিন্তা করিয়া ধর্ম্ম স্বরাজ্যে যাইতে স্বীকার করিলেন। তখন কনোজী ব্রাহ্মণকে এ সব জানাইলেন। ধর্ম্মের আগ্রহে আট জন ব্রাহ্মণ তাঁহার সহগামী হইলেন, জ্বলন্ত পাবক তুল্য এই ব্রাহ্মণগণের সাহচর্য্য পাইয়া হয়ত ধর্ম্মের মন তপস্যা হইতে সংসারের পথে ফিরিতে সম্মত হইয়াছিল। দীর্ঘকাল পরে যখন ধর্ম্ম স্ব-রাজ্য সীমায় পদার্পণ করিলেন তখন এ শুভ-সংবাদ চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িল। প্রজারা দলে দলে সন্ন্যাসী ধর্ম্মকে দেখিতে আসিল। আজিকার দিনে ভাওয়াল সন্ন্যাসীকে দেখিতে যেরূপ জনসমুদ্র ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছিল হয়ত সেইরূপ সে সময় ঘটিয়া থাকিবে। দুর্গ খালি ফেলিয়া সকল সৈন্য সন্ন্যাসী ধর্ম্মকে