পাতা:রাজমোহনের স্ত্রী.djvu/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ ケ রাজমোহনের স্ত্রী হাতে যে তাহার বহুদিননিরুদ্ধ অশ্র ঝরিয়া পড়িয়াছিল, ইহাই তাহার পক্ষে যথেষ্ট ছিল । মাধবও তে তাহার সঙ্গে চোথের জল ফেলিয়াছে ! এই অনুভূতিগুলিই মাতঙ্গিনীর মনকে ভরিয়া রাথিয়াছিল—এই মুহূৰ্ত্তকালের জন্য কৰ্ত্তব্য, ধৰ্ম্ম, নীতি প্রভৃতি—যে কলঙ্কিত আনন্দ-তরঙ্গে তাহার হৃদয় ভাসমান ছিল, তাহার উজ্জলতার উপরে কালো ছায়া ফেলিতে পারে নাই। মাতঙ্গিনীর লালসাপূর্ণ দৃষ্টিতে একটা জাল ছিল, তাহার চাদের মত ললাটে একটা জ্যোতি ছিল ; সে যখন তাহার নিটোল স্বগোল বাহুলতা ডামাস্কবক্সাচ্ছাদিত সোফার উপর রাখিয়া ঈষৎ নমিত ভাবে দাড়াইয়া ছিল, তাহার স্বগঠিত মাথাখানি করতলের উপর ন্যস্ত ছিল এবং সেই হাতের ও উদ্বেল বুকের উপর তাহার স্বকৃষ্ণ বিপুল কেশদাম ছড়াইয় পড়িয়া ছিল, তখন মাধবের হঠাৎ মনে হইয়াছিল, ইহা অপেক্ষ নারীসৌন্দয্যের চোখ-ধাধানে মূৰ্ত্তি যেন পৃথিবীতে দেখা সম্ভব নয়। আবেগকম্পিত কণ্ঠে সে আর্তস্বরে বলিয়া উঠিল, ভেবেছিলাম মানুষের কানে কখনও আমার এই কথা পৌছবে না । তোমার কানেও নয়, কিন্তু কই, চেপে তো রাখতে পারলাম না ! আমার মনে কি হচ্ছে, আমি নিজেই জানি না । মাতঙ্গিনীর উদাম প্রেম-নিবেদনের পর মাধব এই প্রথম কথা কহিল, বলিল, মাতঙ্গিনী, আমি ভেবেছিলাম সহজেই এই বিদায়ের পালা শেষ হবে, কিন্তু তুমি—এ কি করলে তুমি ? মাধবের দুই চোখ জলে ভরিয়া আসিল, সে বলিল, আমি বুঝতে পারছি, তুমি অনেক সহ করেছ, অনেক কিছু ত্যাগ করেছ। আর একবার শেষ চেষ্টা কর, তোমার নিষ্কলঙ্ক হৃদয় থেকে এ চিন্ত মুছে ফেল, সব ভুলে যাও । * মাতঙ্গিনী বলিল, না, না, কিছু ব’লো না তুমি —বলিতে বলিতে মাতঙ্গিনী যেন নিজেই নিজের কথার প্রতিবাদ করিবার চেষ্টা করিল ,