পাতা:রাজমোহনের স্ত্রী.djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
রাজমোহনের স্ত্রী

পর লাফাইয়া ঘরে পড়িল। তাহাদের দেহ বৃষ্টিজলে আর্দ্র, কর্দ্দমাক্ত এবং তাহাদের ভয়াবহ রক্তচক্ষুর অন্তরাল হইতে যেন আগুনের হল্কা বাহির হইতেছিল।

একাদশ পরিচ্ছেদ

চোরের ওপর বাটপাড়ি

 আগন্তুকদের একজন বলিল, আরে চোয়াড়, নিজের পরিবারকে খুন করবি নাকি? সে নিজে যে সাধু উদ্দেশ্য লইয়া আসে নাই, তাহা তাহার চেহারাতেই প্রকট হইতেছিল; তাহার হাতের ছোরাখানিও একবার ঝলকিয়া উঠিল।

 রাজমোহন ও গর্জ্জন করিয়া আগন্তুকদের দিকে ধাবিত হইল, প্রশ্ন করিল, কে তোরা? তাহার হাতের ছুরি দ্রুত আবর্ত্তিত হইতে লাগিল।—আমার ঘরে ডাকাতি!

 ব্যঙ্গের হাসি হাসিয়া আগন্তুকদের একজন উত্তর দিল, আস্তে, আস্তে; গোলমাল করলে তোমার ঘরের লোকেরাই জেগে উঠ্‌বে। ডাকাত নয় দোস্ত, একটু নিরীক্ষণ ক’রে দেখ, আমাদের চিনতে পারবে। তারপর মাতঙ্গিনীর দিকে চাহিয়া তাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলিল, ওগো বাছা, একবার আলোটা এদিকে নিয়ে এস তো, দেখা যাক তোমার স্বামী তার বন্ধুদের মুখ মনে রাখতে পারে কি না!

 কিন্তু মাতঙ্গিনীর তখন সম্পূর্ণ জ্ঞান লুপ্ত না হইলেও সে মুহ্যমানের মত পড়িয়া ছিল, তাহার জীবনের উপর অতর্কিত আক্রমণ এবং এই অপ্রত্যাশিত বাধা দুইই তাহাকে বিমূঢ় করিয়া ফেলিয়াছিল।

 রাজমোহন বলিল, শত্রু হও, মিত্র হও, আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে