হাত দুইটি তাহার গলা হইতে নামাইল না—প্রয়োজন হইলে গলা চাপিয়া ধরা কঠিন হইবে না।
—সে হয়ত ঘুমের ভাণ ক’রে প’ড়ে ছিল।
—হা হা, খুব বোকা পেয়েছ আমাকে! আমি চেয়েছিলাম ঘরের দেওয়ালের পাশ থেকে দূরে গিয়ে পরামর্শ করতে, তুমিই বললে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়াতে। কোনও কুমতলব না থাকলে তুমি তা বলবে কেন? তুমি মাধব ঘোষের কাছে আমাদের নামে লাগিয়েছ, কে জানে কালকে পুলিশের কাছে লাগাবে কিনা! মাধব তোমাকে নিশ্চয়ই বাঁচাবার চেষ্টা করবে আর তুমি বেঁচে থাকলে আমাদের স্বস্তি নেই—খুব পালিয়ে এসেছিলে, নইলে এতক্ষণ সাবাড় হয়ে যেতে।
রাজমোহন হঠাৎ উত্তেজিত হইয়া বলিল, আচ্ছা, তোমরা এখন ঘরে ঢুকে দেখলে কি? মাধবের কাছে খবর দেবার জন্যে যাকে পাঠিয়েছিলাম বলছ, আমি তাকেই খুন করতে যাই নি? তোমরা না এলে এতক্ষণ কোথায় থাকত সে?
—হুঁ। সর্দ্দার দেন একটু দ্বিধায় পড়িল, পরামর্শ চাহিয়া তাহার নির্ব্বাক সঙ্গীর মুখের দিকে সে কিছুক্ষণ চাহিয়া রহিল।
ভিখু বলিল, হ্যাঁ সর্দ্দার, ও ঠিকই বলছে।
রাজমোহন তখন ভয়ে কাঁপিতেছে, সে বলিল, আমাকে যে কারণে তোমরা দোষী করছ, ঠিক সেই কারণেই আমি ওকে খুন করছিলাম।
সর্দ্দার লাফ দিয়া দাঁড়াইয়া উঠিয়া চীৎকার করিতে লাগিল, মাগী গেল কোথায়? ওকেই খুন কর। সে রাজমোহনের স্ত্রীকে রাজমোহনের শাণিত ছুরির নীচে যেখানে পড়িয়া থাকিতে দেখিয়াছিল সেখানে ছুটিয়া গেল। এক স্থানে কয়েকটা কাপড় গাদা করা ছিল, সেখানেও সে হাতড়াইতে লাগিল। নির্ব্বাণোন্মুখ প্রদীপের আলোকে স্পষ্ট কিছু দেখা যাইতেছিল না।