সপ্তম পরিচ্ছেদ।
অশ্বারোহী পর্ব্বতের উপর হইতে দেখিল, চারিজনে এক জনকে বাঁধিয়া রাখিয়া চলিয়া গেল। আগে কি হইয়াছে, তাহা সে দেখে নাই, তখন সে পৌঁছে নাই। অশ্বারোহী নিঃশব্দে লক্ষ্য করিতে লাগিল উহারা কোন্ পথে যায়। তাহারা যখন, নদীর বাঁক ফিরিয়া পর্ব্বতান্তরালে অদৃশ্য হইল তখন অশ্বারোহী অশ্ব হইতে নামিল। পরে অশ্বের গায়ে হাত বুলাইয়া বলিল, “বিজয়! এখানে থাকিও—আমি আসিতেছি— কোন শব্দ করিও না।” অশ্ব স্থির হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল; তাহার আরোহী পাদচারে অতি দ্রুতবেগে পর্ব্বত হইতে অবতরণ করিলেন। পর্ব্বত যে বড় উচ্চ নহে, তাহা পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে।
অশ্বারোহী পদব্রজে মিশ্রঠাকুরের কাছে আসিয়া তাঁহাকে বন্ধন হইতে মুক্ত করিলেন। মুক্ত করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,
“কি হইয়াছে, অল্প কথায় বলুন।” মিশ্র বলিলেন, “চারি জনের সঙ্গে আমি একত্রে আসিতেছিলাম। তাহাদের চিনি না—পথের আলাপ; তাহারা বলে আমরা বণিক্। এইখানে আসিয়া তাহারা মারিয়া ধরিয়া আমার যাহা কিছু ছিল কাড়িয়া লইয়া গিয়াছে।”
প্রশ্নকর্ত্তা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি কি লইয়া গিয়াছে?”
ব্রাহ্মণ বলিল, “একগাছি মুক্তার বালা, দুইটি আশরফি, দুইখানি পত্র।”