পাতা:রাজসিংহ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
৪৭

যাইতেছিলেন। তার পর দেখিলাম, উহারা উদয়পুর যায় নাই। উত্তরমুখেই ফিরিয়াছে—কেন? উত্তরে ত রূপনগর বটে। বোধ হয় চঞ্চলকুমারীর পত্র পাইয়া রাণা অশ্বারোহী সৈন্য সমভিব্যাহারে তাহার নিমন্ত্রণ রাখিতে গিয়াছেন। তাহা যদি না গিয়া থাকেন তবে তাঁহার রাজপুতপতি নাম মিথ্যা। আমি তাঁহার ভৃত্য-আমি তাঁহার কাছে যাইব।—কিন্তু তাঁহারা অশ্বারোহণে গিয়াছেন—আমার পদব্রজে যাইতে অনেক বিলম্ব হইবে। তবে এক ভরসা, পার্ব্বত্যপথে অশ্ব তত দ্রুত যায় না এবং মাণিকলাল পদব্রজে বড় দ্রুতগামী।” মাণিকলাল দিবারাত্র পথ চলিতে লাগিল। যথাকালে সে রূপনগরে পৌঁছিল। পৌঁছিয়া দেখিল যে রূপনগরে দুই সহস্র মোগল অশ্বারোহী আসিয়া শিবির করিয়াছে কিন্তু রাজপুত সেনার কোন চিহ্ণ দেখা যায় না। আরও শুনিল পরদিন প্রভাতে মোগলেরা রাজকুমারীকে লইয়া যাইবে।

 মাঞ্জিলাল বুদ্ধিতে একটি ক্ষুদ্রতর সেনাপতি। রাজপুতগণের কোন সন্ধান না পাইয়া, কিছুই দুঃখিত হইল না। মনে মনে বলিল, মোগল পারিবে না—কিন্তু আমি প্রভুর সন্ধান করিয়া লইব।

 একব্যক্তি নাগরিককে মাণিক বলিল, আমাকে দিল্লী যাইবার পথ দেখাইয়া দিতে পার? আমি কিছু বকশিস দিব। নাগরিক সম্মত হইয়া কিছুদূর অগ্রসর হইয়া তাহাকে পথ দেখাইয়া দিল। মাণিকলাল তাহাকে পুরস্কৃত করিয়া বিদায় করিল, পরে দিল্লীর পথে, চারিদিক ভাল করিয়া দেখিতে দেখিতে চলিল। মাণিকলাল স্থির করিয়াছিল, যে রাজপুত অশ্বারোহি-