পাতা:রাজা রামমোহন রায়ের সংস্কৃত ও বাঙ্গালা গ্রন্থাবলী.pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারি প্রশ্নের উত্তর । २७१ উপাসনানুসারে শাস্ত্ৰে যাহাকে সদাচার কহিয়াছেন তাহা শাস্ত্রের অবহেলা পূর্বক পরিত্যাগ যে করে অথবা বাধক প্ৰযুক্ত তাহার সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানে ত্রুটি হইলে মনস্তাপ ও তত্তৎশাস্ত্ৰ বিহিত প্ৰায়শ্চিত্ত যে না করে তাহার যজ্ঞোপবীত ব্যর্থ হয় এবং যে আপনি স্বধৰ্ম্ম হীন হইয়া অন্য স্বধৰ্ম্ম হীনকে বৃথা যজ্ঞোপবীত ধারী বলে এমত রূপ নিন্দকের এবং স্বদোষ দর্শনে অন্ধের যজ্ঞ সুত্র ধারণ বৃথাও হইতে পারে। ধৰ্ম্ম সংস্থাপনাকাজকী বৃদ্ধ ব্যান্ত্র বিড়াল তপস্বির যে দৃষ্টান্ত লিখিয়াছেন তাহা কাহার প্ৰতি শোভা পায় ইহা বিজ্ঞ ব্যক্তি সকলে বিবেচনা করুন। নাসিকাতে সবিন্দু তিলক যাহার সেবাতে প্ৰায় অৰ্দ্ধ দণ্ড ব্যয় হয় ও ভূরিকাল হস্তে মালা যাহাতে যবনাদির স্পৰ্শাস্পর্শ বিচার নাই এবং লোকের সহিত সাক্ষাল, হইলে অত্যন্ত বিনয় পরোক্ষে আপন জ্ঞাতিবৰ্গ পৰ্য্যন্তেরও নিনদা এবং সর্বদা এই ভাব দেখান যেন এইক্ষণে পূজা সাঙ্গ করিয়া উত্থান করিলাম ও বাহোতে কেবল দয়া ও অহিংসা এই সকল শব্দ সর্বদা মুখে নিৰ্গত হয়। কিন্তু গৃহ মধ্যে মৎস্য মুণ্ড বিনা আহার হয় না। আর এক ব্যক্তি মহানিৰ্বাণের এই বচনে নির্ভর করেন ৷ “যেনোপায়েন দেবেশি লোকঃ শেয়ঃ সমগ্নতে। তদেব কাৰ্য্যং ব্ৰহ্মজ্ঞৈরেষ ধৰ্ম্মঃ সনাতনঃ” ॥ অর্থাৎ যে যে উপায় দ্বারা লোকের শ্ৰেয়ঃ প্ৰাপ্তি হয় তাহাই কেবল ব্ৰহ্মনিষ্ঠের কৰ্ত্তব্য এই ধৰ্ম্ম সনাতন হয়। এবং তদনুসারে বাহে কোন প্ৰতারকতা কি বেশে কি আলাপে কি ব্যবহারে যাহাতে হঠাৎ লোকে ধাৰ্ম্মিক ও সাক্ষাৎ ব্ৰহ্মণ্যদেব জ্ঞান করিয়া থাকে তাহা না করিয়া অন্যের বিরুদ্ধ চেষ্টা না করে এবং তন্ত্রাদি বিহিত মৎস্য মাংসাদি ভোজন যাহা দেখিলে অনেকের অশ্রদ্ধা হয় তাহাও স্পষ্টরূপে করিয়া থাকে। এই দুইয়ের মধ্যে কে বিড়াল তপস্বী হয় ইহা কিঞ্চিৎ প্ৰণিধান করিলেই সুবোধ লোকেরা জানিবেন ৷