পাতা:রাজা রামমোহন রায়ের সংস্কৃত ও বাঙ্গালা গ্রন্থাবলী.pdf/৩৯৬

NJSV রামমোহন রায়ের গ্রন্থাবলী । রূপে যে দেহকে ব্যবহার করা যাইতেছে তাহাতে যে জীব আছেন তিনি ব্ৰাহ্মণ হন। এমত কহিলে, ব্ৰাহ্মণত্ব কেবল ব্যবহার মূলক হইল পরমার্থতি কিছুই নহে। ইহা অঙ্গীকার করিতে হইবেক । আর ব্ৰাহ্মণ বেশধারী কোন এক শূদ্ৰ যাহার জাতি ও কুল জ্ঞাতসার নহে। কিন্তু ব্ৰাহ্মণ রূপে আপনাকে ব্যবহার করাইয়াছে তাহার ব্ৰাহ্মণত্ব কেন না হয় এবং তাহার সহিত এক পংক্তি ভোজন ও এক শয্যা শয়ন উপবেশনাদি যাহা শাস্ত্ৰে নিষিদ্ধ হইয়াছে তাহা করিলে পাপোৎপত্তির বাধক কি ; অতএব জীবাত্মার বাহ্মণত্ব কদাপি সম্ভব নাহে । যদি বলা দেহ ব্ৰাহ্মণ হয়, তবে আচণ্ডাল মনুষ্য সকলের দেহ ব্ৰাহ্মণ হইল, যেহেতু মূৰ্ত্তিতে ও জরা মরণাদি ধৰ্ম্মেতে সকল দেহ তুল্য হয়। অধিকন্তু বাহ্মণ এক শত বর্ষ বাচেন, তােহর আৰ্দ্ধেক ক্ষত্ৰিয়, তাহার অৰ্দ্ধেক বৈশ্য, তাহাব আৰ্দ্ধেক শূদ্র বঁাচেন, এমন্ত নিয়মও নাই যাহার দ্বারা অন্য দেহ অপেক্ষ। ব্ৰাহ্মণ সোহেব বৈলিক্ষণা জানা যায়। আর দেহকে ব্ৰাহ্মণ কহিলে ।পিতামা তার মৃত দেহকে দাহ করলে পুত্রের ব্ৰহ্মহত্যা পাপের উৎপত্তি হউক। অতএব দেহের ব্ৰাহ্মণত্ব কদাপি সম্ভব নহে। যদি জাতিকে ব্ৰাহ্মণ কহ, তবে ক্ষত্ৰিয়াদি বর্ণ এবং পশুপক্ষি সকলও এক এক জাতি বিশিষ্ট হয়। কিন্তু তাহারা ব্ৰাহ্মণ নহে। যদি জাতি শব্দে জন্ম কহ অর্থাৎ শাস্ত্ৰ বিহিত বিবাহ দ্বারা ব্ৰাহ্মণ ব্ৰাহ্মণী হইতে জন্ম যাহার হয়। সেই ব্ৰাহ্মণ, তবে শ্রুতি স্মৃতিতে প্ৰসিদ্ধ অনেক মহর্ষিদের ব্ৰাহ্মণত্ব ব্যাঘাত হইল, যেহেতু ঋষ্যশৃঙ্গ মুনি মৃগী হইতে জন্মোন এবং পুষ্পস্তবক হইতে কোসিব মুনি, উইঢিবি হইতে বাল্মীকি, মাতঙ্গী হইতে মাতঙ্গ মুনি, কলশ হইতে অগস্ত্য, ভেকের গর্ভে মাণ্ডকা, হস্তিগর্ভে আচর ঋষি, শূদ্রা গর্ভে ভরদ্বাজ মুনি, কৈবৰ্ত্তকন্যাতে বেদব্যাস, ক্ষত্ৰিয় হইতে ক্ষত্ৰিয়ার গর্ভে বিশ্বামিত্র জন্মোন ইহঁদের তাদৃশ জন্ম ব্যতিরেকেও সম্যক প্রকার জ্ঞান দ্বারা