পাতা:রাজা রামমোহন রায়ের সংস্কৃত ও বাঙ্গালা গ্রন্থাবলী.pdf/৬৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভট্টাচাৰ্য্যের সহিত বিচার \SS আর কি বিশেষ আছে? ভট্টাচাৰ্য্য অনীশ্বরের দেহ সম্বন্ধের দ্বারা পরিচ্ছিন্নত্ব দেখিয়া ঈশ্বরের দেহ আর পরিচ্ছিন্নত্ব যে কল্পনা করেন। ইহা হইতে আর কি আশ্চৰ্য্য আছে ? আমরা ভয় পাইতেছি যে যখন জীবের দেহ সম্বন্ধ দেখিয়া, পরমাত্মার দেহ সম্বন্ধ অঙ্গীকার করিতে, ছন তখন জীবের সুখ দুঃখাদি ভোগ ও স্বৰ্গ নরকাদি প্ৰাপ্তির শাস্ত্ৰ দেখিয়া পরমাত্মারও সুখ দুঃখাদি ভোগ বা b স্বীকার করেন। ভট্টাচাৰ্য্য লেখেন “যদি বল আমরা পরমাত্মার তাহা ( প্ৰকৃত্যাদি৷ ) মানিলে ত্তোমারদিগের দেবাত্মার কি আইসে ? ইহাতে আমরা এই বলি তবে আমারদিগের দেবতাদিগকে তোমরা মানিলে যেহেতু পরমাত্মার যে প্ৰকৃত্যাদি তাহাকেই আমরা ঈী পুংলিঙ্গ ভেদে দেবী দেবাত্মা নামে কহি তোমরা ঈশ্বরীয় প্ৰকৃত্যাদি রূপে কহ এই কেবল জলপানি ইত্যাদিবৎ ?” উত্তর, যদি ভট্টাচাৰ্য্য পরমাত্মার প্রকৃত্যাদিকে দেবী দেবাত্মা নামে স্বীকার করেন তাহাতে কাহারও আপত্তি নাই যেহেতু ঈশ্বরীয় মায়া কোথায় দেবী রূপে কোথায় দেবরূপে কোথায় জল কোথায় স্থলীরূপে সদ্ৰপ পরমাত্মাতে অধ্যস্ত হইয়া প্ৰকাশ পাইতেছে আর ঐ ভ্ৰমাত্মক দেবী দেব জল স্থলাদির প্ৰতীতি যথার্থ জ্ঞান হইলেই নাশকে পায় । আর লেখেন “যদি বল আমরা মাংসপিণ্ড মাত্ৰ মানি মৃৎ, পাষাণাদি নিৰ্ম্মিত কৃত্ৰিম পিণ্ড মানি না।” উত্তর, এ আশঙ্কা ভট্টাচাৰ্য্য কি নিদর্শনে করিতেছেন অনুভব হয় না যেহেতু আমরা মাংসপিণ্ড ও মৃত্তিকা পাষাণাদি নিৰ্ম্মিত পিণ্ড এ দুইকেই মানি কিন্তু এ দুইয়ের কাহাকেও স্বতন্ত্র ঈশ্বর কহি না । পরমাত্মার সত্তার আরোপের দ্বারা সত্যের ন্যায় প্ৰতীত হইয়া লৌকিক ব্যবহারে ঐ দুইয়ের প্রথম যে মাংসপিণ্ড সে পখাদির ভােজনে আইসে আর দ্বিতীয় যে মৃত্তিকা পাষাণাদি পিণ্ড সে খেলা আর অন্য অন্য আমোদের কারণ হয়।