পাতা:রাজা রামমোহন রায়ের সংস্কৃত ও বাঙ্গালা গ্রন্থাবলী.pdf/৭৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৩২ * রামমোহন রায়ের গ্রন্থাবলী। তাহার অন্তে “তে” এই অক্ষর অধিকরণ বোধক হয়, ছুরি, ছুরিতে ; হাতি, হাতিতে, ইত্যাদি। বাক্যেতে এক নাম যখন অন্য নামের সহিত সাক্ষাৎ কিম্বা পরম্পরা সম্বন্ধ দ্বারা অন্যের অর্থের সংকোচ করে তাহাকে সম্বন্ধ পরিণাম কহি ; সে শব্দ যদি হলন্ত কিম্বা অকারান্ত হয় তবে সম্বন্ধ বোধের নিমিত্ত তাহার অন্তে “এর” সংযোগ করা যায় ; যেমন রামের ঘর, কৃষ্ণের বাটী, ইত্যাদি। আর এতদ্ভিন্ন অক্ষর যাহার শেষে থাকে তাহার সম্বন্ধ বোধের নিমিত্ত কেবল রেফের সংযোগ করা যায় ; যেমন, রাজার ধন, বঁাশির শব্দ, ইত্যাদি। এ স্থলে থর এই শব্দ মাত্রের প্রয়োগ করিলে তাবৎ ঘর বুঝায় ; কিন্তু রামের ঘর কহিলে অন্যের ঘর না বুঝাইয়া রামেল সহিত যে ঘরের সম্বন্ধ আছে কেবল তাঙ্গার বােধ হয়, এই কারণ তাহাকে সম্বন্ধ পরিণাম কহি । যাহার দ্বারা ক্রিয়া নিম্পন্ন হয়, তাহাৰ বোধের নিমিত্ত ভাষাতে অভিহিত পদের পরে “দিয়া” শব্দের প্রযোগ করা যায় ; যেমন, ছুরি দিয়া কাটিলেক । আর কখন কখন সম্বন্ধ পরিণামের পরে “দ্বারা” শব্দ দিয়া ঐ করণকে কহা যায় ; যেমন, ছুরির দ্বায়। কাটিলেক। কখন বা অধিকরণ বাচক বিভক্তির দ্বারা করণের জ্ঞান হইয়া থাকে, যদি সেই কারণ অপ্ৰাণি হয় ; যেমন, ছুরিতে কাটিলেক । অতএব করণের নিমিত্ত শব্দের পৃথক রূপ করিবার আবশ্যক দেখি নাই। কোন এক ক্রিয়ার বক্তব্য স্থলে যখন অন্য বস্তু হইতে এক বস্তুর নিঃসরণ অথবা ত্যাগ বোধ হয়, তখন তাহার জ্ঞাপনের নিমিত্ত প্ৰথম বস্তুর নামের পরে যদি সেই প্ৰথম বস্তু এক বচনান্ত হয় তবে “হইতে” এই শব্দের প্রয়োগ করা যায়। আর যদি বহুবচনান্ত হয় তবে বহুবচনান্ত সম্বকীয় পরিণাম পদের পরে “হইতে”ইহার প্রয়োগ হইয়া থাকে, যেমন গ্ৰাম হইতে, মন্ত্রিীদের হইতে ; বেণেদের হইতে ; অতএব বঙ্গভাষায় অপাদান কারকের নিমিত্ত শব্দের পৃথক রূপ করিবার আবশ্যক নাই।