একটী পল্লীগ্রামে। দেবলীলালের বয়ঃক্রম যখন ষোল বৎসর, সেই সময়ে কোন একজন দালালের সঙ্গে সে কলিকাতায় আইলে, এবং তাহার সহিত সে সামান্য দালালী কার্য্যে প্রবৃত্ত হয়; সেই কার্য্যে এতদিবস পর্যন্ত নিযুক্ত থাকিয়াও আজ পর্য্যন্ত তাহার সেই সামান্য দালালী ঘুচে নাই। এখন উহার বয়ঃক্রম প্রায় ষাট বৎসর হইয়াছে, বয়ঃক্রমে দেবীলাল যেরূপ পরিপক্ক হইয়াছে, কার্যে কিন্তু এখনও সেরূপ পরিপক্ক হইতে পারে নাই।
দেবীলাল সেক্রেটারী বাবুকে সঙ্গে করিয়া একজন মাড়ওয়াড়ির দোকানে লইয়া গেল, এবং তাঁহার দোকান হইতে বাবুর মনোনীত প্রায় সত্তর আশী টাকার বস্ত্রাদি ক্রয় করিয়া দিল। সেক্রেটারী বাবু দেবীলালের দালালীর গতিক দেখিয়া সবিশেষ সন্তুষ্ট হইলেন, এবং পূর্বে তিনি অন্য স্থান হইতে যেরূপ মূল্যে সেইপ্রকায় বস্ত্র ক্রয় করিয়াছিলেন, অদ্য তাহা অপেক্ষা অনেক নূয়ন মুল্যে সেই প্রকার বস্ত্র পাইয়া দেবীলালের অনেক প্রশংসা করিলেন, এবং আপন পকেট হইতে একটা টাকা বাহির করিয়া দেবীলালকে প্রদান করিলেন ও কহিলেন, “দেবীলাল। তোমার কার্য্য দেখিয়া আমি তোমার উপর একান্ত সন্তুষ্ট হইয়াছি। এখন হইতে বড়বাজারে আমার যে কোন দ্রব্য ক্রয় করিবার প্রয়োজন হইবে, তাহা তোমার সাহায্য ভিন্ন কথন ক্রয় করি না। “
দেবীলাল। মহারাজ! আমি আপনার তাবেদার! হুকুম করিবামাত্র তাহা সম্পন্ন করিতে কিছুমাত্র ক্রটী করিব না।