পাতা:রাণী না খুনি? (প্রথম অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
দারোগার দপ্তর, ৮০ম সংখ্যা।

বাহির করিয়া আনিয়া আমার হস্তে প্রদান করিলেন। সেই নোট দেখিয়া আমি যে কতদূর বিস্মিত হইলাম, তাহা বলিতে পারি না। কারণ, যে সন্দেহের উপর নির্ভর করিয়া, আমি সেই নোটগুলি দেখিবার ইচ্ছা করিয়াছিলাম, এখন দেখিলাম, সেই সন্দেহ বিশ্বাসে পরিণত হইল। ইতিপূর্বে অনুসন্ধানে আমি অবগত হইতে পারিয়াছিলাম যে, রামজীলাল একজন পশ্চিমদেশীয় লোক, বঙ্গদেশে থাকিয়া ব্যবসা-কার্য্য করিয়া থাকেন বটে; কিন্তু বঙ্গভাষার সহিত তাঁহার কিছুমাত্র সংশ্রব নাই। তিনি না পারেন বাঙ্গালা কহিতে—না পারেন বাঙ্গালা লিখিতে। এখন দেখিলাম, সেই নোটগুলির উপর রামজীলালের নাম স্বাক্ষর আছে সত্য; কিন্তু উহা হিন্দীভাষায় নাই, বাঙ্গালা ভাষায়। রামজীলাল যখন বাঙ্গালা ভাষা একবারেই অবগত নহেন, তখন তিনি বাঙ্গালা ভাষায় আপনার নাম কিরূপে স্বাক্ষর করিলেন, তাহার কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিলাম না। আরও ভাবিলাম, রামজীলাল যখন সেই সকল অর্থ অপহরণ করিয়া পলায়ন করিতেছে, তখন সে যে আপনার নাম ও ঠিকানা স্পষ্ট করিয়া লিখিয়া দিয়া তাহার বিপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ করিয়া রাখিয়া যাইবে, তাহাই বা সহজে বিশ্বাস করি কি প্রকারে?

 মনে মনে এইরূপ ভাবিলাম সত্য; কিন্তু কাহাকেও কিছু না বলিয়া, সেই নোটগুলি করেন্‌সি আফিসে প্রত্যর্পণ-পুর্ব্বক আস্তে আস্তে সেই স্থান হইতে প্রস্থান করিলাম।

 কালীবাবুর অবস্থা আমি উত্তমরূপে জানিতাম। তাহার নিজের গাডিঘোড়া নাই, অথচ আড়গোড়া হইতে গাড়ি ভাড়া করিয়া তাহাতে চড়িবার ক্ষমতাও তাহার নাই। এরূপ অবস্থায় কাহার