পাতা:রাণী না খুনি? (প্রথম অংশ) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাণী না খুনী?

তাঁহার দেশে পর্য্যন্ত টেলিগ্রাফ করিয়াছি; কিন্তু কোন স্থান হইতেই তাঁহার কোনরূপ সংবাদ প্রাপ্ত হই নাই। এখন আমরা বুঝিতে পারিতেছি না যে, রামজীলালের ও তাহার নিকটস্থিত সেই বহমূল্য জহরতগুলির অবস্থা এখন কি হইয়াছে। এই নিমিত্ত এই আবেদন-পত্রের দ্বারা সরকারের সাহায্য গ্রহণ করিতেছি, তাঁহারা অনুসন্ধান করিয়া, যাহাতে রামজীলাল ও জহরতগুলির অনুসন্ধান হয়, তাহার চেষ্টা করুন। বলা বাহুল্য, এই অনুসন্ধান করিতে যে সকল খরচ-পত্রের প্রয়োজন হইবে, তাহা আমরা প্রদান করিতে প্রস্তুত আছি।”

 এই দরখাস্তের অনুসন্ধানের ভার আমার উপর ন্যস্ত হইলে, আমি কিন্ত সেই রাত্রিতে উহার অনুসন্ধানে বহির্গত হইলাম না। পরদিবস হইতে উহার অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইব, মনে মনে এইরূপ স্থির করিলাম; কিন্তু কালীবাবু ও রামজীলাল সম্বন্ধে নানা প্রকার তর্ক আসিয়া মনে উপস্থিত হইতে লাগিল।

 একবার ভাবিলাম, রামজীলাল নিশ্চয়ই একজন সামান্য বেতনের কর্ম্মচারী হইবেন, দশ হাজার টাকা মূল্যের জহরত তাঁহার হস্তে একবারে পতিত হইয়াছে, এ লোভ সম্বরণ করা তাঁহার পক্ষে কতদূর সম্ভব? কিন্তু পরক্ষণেই মনে হইল, রামজীলাল যে ধনীর কার্য্য করিয়া থাকেন, তিনি নিজেই বলিতেছেন যে, রামজীলাল একজন বহু পুরাতন ও অতি বিশ্বাসী কর্ম্মচারী। যদি তাঁহার কথা প্রকৃত হয়, তাহা হইলে অনেক সময় তাঁহার হস্তে যে অনেক অর্থ আসিয়া পড়ে, সে সম্বন্ধে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই। এরূপ অবস্থায় এই সকল জহরত বা তাহার মূল্য গ্রহণ করিয়া পলায়ন করা রামজীলালের পক্ষে কতদূর সম্ভব, তাহা স্থির করিয়া উঠা নিতান্ত নহজ নহে।