রাণী না খুনী?
১৫
আমি। তোমাকে আমি এখন কেবলমাত্র একটী কথা জিজ্ঞাসা করিতে চাই।
কালী। কি?
আমি। যে পশ্চিমদেশীয় জমিদার তোমার নিকট হইতে জহরত গ্রহণ করিয়াছিলেন, তাঁহার সমভিব্যাহারে তুমি আর কোন বাড়ীতে গমন করিয়াছিলে কি?
কালী। গিয়াছিলাম বৈকি। ত্রৈলোক্যের গৃহে তাঁহাকে কয়েকবার সঙ্গে করিয়া আনিয়াছিলাম। ত্রৈলোক্য ত আপনার সম্মুখেই বসিয়া আছে, তাহাকে জিজ্ঞাসা করুন না কেন; তাহা হইলেই ত জানিতে পারিবেন, আমার কথা সত্য কি না।
আমি। ত্রৈলোক্যকে আমি আর কি জিজ্ঞাসা করিব? তুমি যাহা বলিতেছ, সেও তাহাই বলিবে। তুমি যদি সেই জমিদারকে অপর কোন বাড়ীতে লইয়া না গিয়া থাক, তাহা হইলে আর এক খানি বাড়ী কাহার নিমিত্ত এবং কিসের জন্য় ভাড়া করিয়াছিলে?
আমার এই কথা শুনিবামাত্রই ত্রৈলোক্যের যেন হৃৎকম্প উপস্থিত হইল। সে একবার আমার মুখের দিকে তাকাইয়া কালীবাবুর মুখের দিকে তাকাইতে লাগিল। দেখিলাম, ত্রৈলোক্যের সঙ্গে সঙ্গে কালীবাবুরও মুখ শুখাইয়া উঠিয়াছে। আরও তাহার মুখ দেখিয়া বেশ বুঝিতে পারিলাম, সে তাহার মনের ভাব গোপন করিতে বিধিমতে চেষ্টা করিতেছে; কিন্তু কোনরূপেই যেন কৃতকার্য্য হইতে পারিতেছে না।
আমার কথা শুনিয়া কালীবাবু যেন একটু রাগ ভাব প্রকাশ করিল ও কহিল, “কি মহাশয়! আপনি আমার সহিত ঠাট্টা করিতেছেন, না বসিয়া বসিয়া স্বপ্ন দেখিতেছেন?”