পাতা:রাধারাণী-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম খণ্ড : অষ্টম পরিচ্ছেদ २१ কেন বানের মুখে কুটার মত, সংসারস্রোতে, অজ্ঞাত পথে ভাসিয়া চলিলাম ? এ সংসারে অনেক হুঃখী আছে, আমি সৰ্ব্বাপেক্ষা হুঃখী কেন? এ সকল কাহার খেলা ! বেতার ? জীবের এত কষ্টে দেবতার কি মুখ ? কষ্ট দিবার জন্য স্মৃষ্টি করিয়া কি মুখ ? মূৰ্ত্তিমতী নির্দয়তাকে কেন দেবতা বলিব ? কেন নিষ্ঠুরতার পূজা করিব ? মানুষের এত ভয়ানক ছুঃখ কখন দেবকৃত নহে—তাহা হইলে দেবতা রাক্ষসের অপেক্ষা সহস্ৰগুণে নিকৃষ্ট। তবে কি আমার কৰ্ম্মফল ? কোন পাপে আমি জন্মান্ধ ? দুই এক পা করিয়া অগ্রসর হইতে লাগিলাম—মরিব । গঙ্গার তরঙ্গরব কাণে বাজিতে লাগিল—বুঝি মরা হইল না—আমি মিষ্ট শব্দ বড় ভালবাসি। ন, মরিব । চিবুক ডুবিল! অধর ডুবিল! আর একটু মাত্র। নাসিকা ডুৰিল । চক্ষু ডুবিল! আমি ডুবিলাম । ডুবিলাম, কিন্তু মরিলাম না। কিন্তু এ যন্ত্রণাময় জীবনচরিত আর বলিতে সাধ করে না। আর একজন বলিবে । আমি সেই প্রভাতবায়ুতাড়িত গঙ্গাজলপ্রবাহমধ্যে নিমগ্ন হইয়া ভাসিতে ভাসিতে চলিলাম। ক্রমে শ্বাস নিশ্চেষ্ট, চেতনা বিনষ্ট হইয়া আসিল ।