পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৯৬
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।

ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানির সমুদয় কৰ্মচারীর মনে বহুদিন প্রবল ছিল। প্রথম। প্রথম কোম্পানির কর্মচারিগণ এরূপ স্বল্প বেতন পাইতেন যে, সেরূপ স্বল্প বেতনে ভদ্রলোক এত দূরদেশে আসে না। কিন্তু অবৈধ অর্থোপার্জনের উপায় এত অধিক ছিল যে, তাহার প্রলোভনে লোকে এদেশে আসিতে ব্যগ্ৰ হইত। এই সকল কর্মচারীর অধিকাংশকে ফ্যাক্টর বা কুঠীওয়াল বলিত। কুঠওয়ালগণ কোম্পানির কুঠী সকলের পরিদর্শন করিতেন, বাণিজ্য দ্রব্যের ক্রয় বিক্রয়ের তত্ত্বাবধান করিতেন, হিসাব পত্র রাথিতেন এবং বিবিধ প্রকারে কোম্পানির সওদাগরী কার্য্যের সহায়তা করিতেন।

 ১৭৬৫ খ্রীষ্টাব্দে কোম্পানি যখন দেওয়ানী সনন প্রাপ্ত হইলেন, তখন রাজস্ব আদায়ের ভার কোম্পানির কর্মচারীদিগকে লইতে। হইল। ফৌজদারী। কার্য্যের ভার মুরশিদাবাদের মুসলমান গবৰ্ণমেণ্টের হস্তেই থাকিল। যখন রাজস্ব আদায়ের ভার কোম্পানির হস্তে আসিল, তখন কোম্পানির কুঠীওয়াল গণই কালেক্টর হইল্প দাড়াইলেন। তাহায়া জেলায় জেলায় থাকিয়া কোম্পানির এজেন্টের দায় সওদাগরীর তত্ত্বাবধান করিতেন, সেই সঙ্গে কালেক্টরেয় কাজ ও করিতেন। বণিকের ভাব তখনও তাহাদিগকে পরিত্যাগ করিল ন৷। যেরূপে হউক অর্থ সংগ্রহ। করিতে হইবে, এই ভাবটা তাঁহাদের মনে প্রবল। থাকিল। ” আমরা দেশের রাজা, প্রজাদিগের সুখ দুঃখের জন্য অমরা দায়ী, এভাব তাঁহাদের মনে প্রবেশ করিল না। প্রমাণ স্বরূপ ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের। উল্লেখ করা যাইতে পাবে॥ অগ্রেই বলিয়াছি নবপ্রতিষ্ঠিত রাজগণ তখন প্রজাকুসের দুর্ভিক্ষ-ক্লেশ নিবারণের জষ্ঠ্য কিছুই করেন নাই। কেবল তাহা নছে; ইহা স্মরণ করিতেও ক্লেশ হর যে দুর্ভিক্ষের বৎসরে সমগ্ৰ বঙ্গদেশের প্ৰজ-সংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ কালগ্ৰাসে পতিত হইয়াছিল, তথাপি রাজস্বের এক 'কপর্দক ও ছাড়া হয় নাই। সে বৎসরে যাহ! আদায় হইতে পারে নাই পর বৎসরে সে সমগ্র আদায় করিয় লওয়া হইয়াছিল। তদানীন্তন গবর ওয়ারেণ হেষ্টিংস বাহাদুর ১৭৭২ সানের ৩ রা নবেম্বর দিবসে ইংলণ্ডের কর্তৃ পক্ষকে যে। পত্র লেখেন তাহাতে রাজস্ব আদামের নিম্নলিখিত তালিকা। প্রাপ্ত হওয়া যায়। ১৭৬৮-৬৯ সালে ১৫২৫৪৮৫৬ টাকা; ১৭৬৯-১৭৭০ সালে। ১৩১৪৯১৪৮ টাকা; ১৭৭০-৭১ সালে অর্থাৎ দুর্ভিক্ষের বৎসংর ১৪•৭৬০৩• টাকা; এবং ১৭৭১-৭২ সালে অর্থাৎ চর্ভিক্ষের পর বৎসরে,। ১৫৭২৬৫৭৬ টাকা। তবেই দেথা যাইতেছে তন রাজগণ দুর্ভিক্ষক্লিষ্ট প্রজাবৃন্দের রক্ত