পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।

য়তা করা তাঁহার প্রধান কার্য্য ছিল। তখনও স্বদেশের সর্ব্ববিধ উন্নতির বিষয়ে তাঁহার সম্পূর্ণ মনোযোগ ছিল। যৌবনকালে তিনি যে স্বাধীনচিত্ততার ও সংসাহসের পরিচয় দিয়াছিলেন, উত্তর কালে কিয়ৎপরিমাণে তাহার বিপর্য্যয় ঘটিলেও তাহা তাঁহাকে একেবারে পরিত্যাগ করে নাই। ১৮৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি মানবলীলা সম্বরণ করেন। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্ব্বে তিনি একটি মহৎকার্যা করিয়াছিলেন। তাঁহার বন্ধুগণের নিকটে ঋণ স্বরূপ তাঁহার প্রায় ৪০,০০০ হাজার টাকা পাওনা ছিল; তিনি সেই সকল ঋণের সমুদয় কাগজপত্র পোড়াইয়া ফেলিয়া, আপনার বন্ধুদিগকে অণৃণী করিয়া গেলেন।


রসিককৃষ্ণ মল্লিক।

 দুঃখের বিষয় ইহার জীবনচরিত সম্বন্ধে অধিক কিছু সংবাদ সংগ্রহ করিতে পারি নাই। কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও রামগোপাল ঘোষের পর ইনিই ডিরোজিও-দলের অগ্রণীদিগের মধ্যে প্রধান ছিলেন। বরং এরূপ শুনিয়াছি ষে একাডেমিকেয় বক্তৃতাদি যাহারা শুনিতে আসিতেন, তাঁহারা রামগোপালের উন্মাদিনী বক্তৃতা অপেক্ষা রসিকের গভীর চিন্তা ও বিজ্ঞতাপূর্ণ বক্তৃতা ভাল বাসিতেন। রামতনু বাবুর মুখে সর্ব্বদা তাঁহার নাম শুনিতাম। তাঁহার সারাজীবনে যেন একদিনের জন্যও রসিক তাঁহাকে পরিত্যাগ করেন নাই। চল্লিশ বৎসর পূর্ব্বে রসিক যাহা বলিয়া গিয়াছেন তাহা গুরুবাক্যের ন্যায় তাঁহার হৃদয়ে বদ্ধমূল ছিল। আমাদের ন্যায় নব্যদলের কোনও মত যদি রসিকের মতের বিরুদ্ধ হইত, তাহা হইলে লাহিড়ী মহাশয় তাহা কাণে তুলিতেন না; বলিতেন “তোমরা কি রসিকের চেয়ে ভাল বোঝ?” এই বাল্য-সুহৃদ অথচ গুরুতুল্য রসিককৃষ্ণ মল্লিকের জীবনচরিত সম্বন্ধে অধিক কথা যে পাঠকগণকে শুনাইতে পারিলাম না. এজন্য দুঃখিত রহিলাম। তাঁহার পরিবায়স্থ ব্যক্তিগণের নিকট যাহা কিছু সংগ্রহ করিতে পারিয়াছি তাহা নিম্নে দিতেছি।

 অনুমান ১৮১০ সালে কলিকাতার সিন্দুরীয়া পটী নামক স্থানে রসিককৃষ্ণের জন্ম হয়। তাঁহার পিতার নাম নবকিশোর মল্লিক। নবকিশোর মল্লিকের