পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
১৩৯

দেহান্ত হইলে, দেশীয় ও বিদেশীয় সকল শ্রেণীর লোকের উপরই যেন একটা শোকের ছায়া পড়িল। ১৮৬৯ সালে ৪ঠা জানুয়ারি কলিকাতা টাউনহলে তাঁহার স্মরণার্থ এক সভা হয়। ঐ সভাতে নিযুক্ত কমিটীর চেষ্টাতে অর্থ সংগৃহীত হইয়া তাঁহার এক মর্ম্মর-মূর্ত্তি নির্ম্মিত হয়, তাহা ১৮৭৬ সালে কলিকাতা ছোট আদালতের দ্বারে স্থাপিত হয়। এখনও উহা আদালত গৃহকে সুশোভিত করিয়া রহিয়াছে।

প্যারীচাঁদ মিত্র।

 ১৮১৪ সালে কলিকাতাতে প্যারীচাঁদের জন্ম হয়। ইহার পিতায় নাম রামনারায়ণ মিত্র। তৎকাল-প্রসিদ্ধ রীতি অনুসারে কিছুদিন গুরুমহাশয়ের পাঠশালে পড়াইয়া ইহার পিতা ইহাকে পারস্য ভাষা শিখাইতে আরম্ভ করেন। কিন্তু অল্পকালের মধ্যে সে বন্দোবস্ত রহিত হইল। আত্মীয় স্বজনের পরামর্শে ইহাকে হিন্দুকালেজে দেওয়াই স্থির হইল। তদনুসারে ১৮২৯ সালে ইনি হিন্দুকালেজে ভর্ত্তি হইলেন। সেখানে সমুদয় পরীক্ষায় সুখ্যাতির সহিত উত্তীর্ণ হইয়া পুরস্কার ও বৃত্তি পাইয়াছিলেন।

 প্যারিচাঁদের অন্তরে জনহিতৈষণা স্বভাবতঃ এরূপ প্রবল ছিল যে নিজে ইংরাজী শিখিতে শিখিতে নিজ পল্লীর অপরাপর বালকদিগকে সেই বিদ্যাবিতরণের বাসনা প্রবল হইল। তদনুসারে স্বভবনে একটা অবৈতনিক বিদ্যালয় খুলিয়া পল্লীর বালকদিগকে শিক্ষা দিতে প্রবৃত্ত হইলেন। এই বিদ্যালয় কত দিন ছিল বলিতে পারি না। কিন্তু এরূপ শুনিয়াছি যে প্রথম প্রথম তাঁহার সহাধ্যায়ী বন্ধু রসিককৃষ্ণ মল্লিক, রাধানাথ শিকদার, শিবচন্দ্র দেব ইহাতে শিক্ষকতা করিতেন এবং মহাত্মা ডেবিড হেয়ার ও ডিরোজিও ইহার পরিদর্শক ছিলেন।

কালেজ হইতে উর্ত্তীর্ণ হইয়া ১৮৩৫ সালে তিনি কলিকাতা পাবলিক লাইব্রেরির ডেপুটী লাইব্রেরিয়ানের পদে নিযুক্ত হন। ঐ বৎসরেই এই লাইব্রেরী স্থাপিত হয়। এই লাইব্রেরী কিছুদিন এসপ্লানেডে মে ষ্ট্রং নামক একজন ইংরাজের ভবনে থাকে। তৎপরে কিছুদিনের জন্য ফোর্ট উইলিয়ম কালেজের বাটীতে উঠিয়া যায়। তৎপরে সার চার্লস মেটকাফের স্মৃতিচিহ্ল স্বরূপ