পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/২০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
১৬১

খানিতেই এরূপ অভদ্র ভাষা ব্যবহৃত হইত যে, ১৭৯৪ সালে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ বেঙ্গল জর্নালের সম্পাদক মেং উইলিয়াম ডুইএনকে (W. Duane) ধরিয়া বন্দী করিয়া স্বদেশে প্রেরণ করিতে বাধ্য হন। তৎপরে কিছুদিন যায়। পরে যখন টিপু সুলতানের সহিত যুদ্ধ বাঁধে এবং সেই যুদ্ধ সম্বন্ধে ইংরাজদের মধ্যে মতভেদ উপস্থিত হয়, তখন গবর্ণর জেনেরাল লর্ড ওয়েলেসলি বিধিমতে সংবাদ পত্র পরীক্ষার রীতি (Censorship) স্থাপন করেন। এই বিধি অনুসারে প্রত্যেক প্রবন্ধ গবর্ণমেণ্টের নিযুক্ত কর্ম্মচারীকে দেখাইয়া মুদ্রিত করিতে হইত। ১৮১৩ সালে এই নিয়মকে আরও কঠিন করা হয়। ১৮১৮ সালে লর্ড হেষ্টিংস এই নিয়ম এক প্রকার রহিত করেন। তাহার ফলস্বরূপ নুতন নূতন কাগজ দেখা দেয়। তন্মধ্যে এই ১৮১৮ সালে কলিকাতা জর্ণাল (Calcutta Journal) নামে এক কাগজ বাহির হয়। বকিংহাম (Buckingham) নামক একজন ইংরাজ তাহার সম্পাদক ও স্যাণ্ডফোর্ড, আর্ণট (Sandford Arnot) নামে একজন ইংরাজ সহকারী সম্পাদক নিযুক্ত হন। তদানীন্তন গবর্ণমেণ্টের ইংরাজ কর্ম্মচারিগণ সংবাদপত্রের সমালোচনা দ্বারা উত্তেজিত হইয়া লর্ড হেষ্টিংসকে মুদ্রাযন্ত্রের শাসনের জন্য বার বার উত্তেজিত করিতে থাকেন; কিন্তু সেই উদারনৈতিক রাজপুরুষ তাহাতে কর্ণপাত করিতেন না। এই পরামর্শদাতাদিগের মধ্যে একজন ছিলেন জন এডাম, ইনি পরে কিছুকালের জন্য গবর্ণর জেনেরালের পদে উন্নীত হইয়াছিলেন।

 ১৮২৩ সালে যখন জন এডাম গবর্ণর জেনেরালের পদে প্রতিষ্ঠিত, তখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা লইয়া আবার গোলযোগ উঠে। ডাক্তার ব্রাইস, (Dr. Bryce) নামক গবর্ণমেণ্টের নিযুক্ত একজন কর্ম্মচারীকে আক্রমণ করাতে গবর্ণর জেনেরাল কলিকাতা জর্ণাল নামক পত্রেয় সম্পাদক বকিংহাম সাহেবকে দুই মাসের মধ্যে ভারত ত্যাগ করিতে আদেশ করেন। ইহার কিছুদিন পরে ঐ পত্রের সহকারী সম্পাদক (Sandford Arnot) কে ধরিয়া অব্যবহিত পরগামী জাহাজে তুলিয়া বিলাতে রওয়ানা করা হয়। ইহার পরেই এই প্রশ্ন উঠে, ইংরাজকে যেন স্বদেশে ফিরিয়া পাঠান হইল, কিন্তু ইদ্রুঁস, পিদ্রুঁস, বা গমিস নামক কোনও ফিরিঙ্গী সম্পাদক ঐরূপ অপরাধ করিলে কি করা হইবে? তাহাকে কি গবর্ণমেণ্টের ব্যয়ে বিলাত দেখাইয়া আনা হইবে? এই সংকট মোচনের উদ্দেশে এডাম মুদ্রা

 ২১