পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৫৬
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

হোমিওপেথি বিষয়ক গ্রন্থের সমালোচনা লিখিতে অনুরোধ করেন। সমালোচনার্থ ঐ গ্রন্থ পাঠ করিতে গিয়াই মহেন্দ্রলালের মনে হয় যে কাৰ্য্যতঃ হোমিওপেথি চিকিৎসা কিরূপ তাহ না দেখিয়া সমালোচনা করা তাহার পক্ষে কর্তব্য নহে। অতএব তিনি রাজা বাবুর সহিত র্তাহার কতকগুলি রোগীর চিকিৎসা দেখিতে আরম্ভ করেন। গ্রন্থ পাঠ করিতে করিতে এবং চিকিৎসা দেখিতে দেখিতে সরকার মহাশয়ের মত পরিবৰ্ত্তিত হইয়া গেল। হোমিওপেথিক .চিকিৎসা প্রণালীই উৎকৃষ্টতর প্রণালী বলিয়া মনে হইল। ১৮৬৬ সালের মধ্যে এই পরিবর্তন ঘটিল। ধখন তিনি মত পরিবর্তনের বিশিষ্ট কারণ পাইলেন তখন সহরের এলোপেথিক চিকিৎসকদলে তাহার বাৰ্ত্ত প্রকাশ করিতে ক্রটা করিলেন না। ১৮৬৭ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি দিবসে ব্রিটিশ মেডিকাল এসোসিএশনের চতুর্থ সাম্বৎসরিক সভার অধিবেশন হইল। তাহাতে ডাক্তার সরকার এক বক্তৃতা পাঠ করিলেন, তাহাতে . প্রচলিত চিকিৎসা প্রণালীর অনির্দিষ্টত দোষ প্রদর্শন করিয়া হানিম্যান প্রদর্শিত প্রণালী উৎকৃষ্টতর বলিয়া ঘোষণা করিলেন। আর কোথায় যায় ! সাপের লেজে যেন পা পড়িল ! ডাক্তার ওরালার নামে একজন ইংরাজ ডাক্তার বলিলেন, “ডাক্তার সরকার থাম ধাম, আর একটী কথা বলিলে তোমাকে এ ঘর হতে বাহির করে দেব।” তৎপরে সহরের এলোগেধি দল ডাক্তার সরকারকে একঘরে করিল; তিনি চিকিৎসক সভা কর্তৃক বর্জিত হইলেন, তিনি তাহা গ্রাহ করিলেন না। কলিকাতা তোলপাড় হইয়া যাইতে লাগিল। কিন্তু বঙ্গভূমি যেন এই বীরের পদভরে কঁাপিতে লাগিল। বাস্তবিক তাঞ্ছার সত্যপ্রিয়তা ও মনুষ্যত্ব তখন আমাদের মনকে অনেক উচ্চে তুলিয়াছিল। বিশ্বাস কর, “বাঙ্গালি যে ভারতের সকল প্রদেশের মানুষের শ্রদ্ধার পাত্র হইয়াছে, তাহ এইসকল সত্যপ্রিয় তেজীয়ান বীষ্মপ্রকৃতিবিশিষ্ট মানুষের গুণে।

 মহেন্দ্রলাল সরকার স্বীয় চরিত্রেয় প্রভাবে হোমিওপেথিকে কিরূপ উচু ' করিয়া উঠাইলেন, তাহ সুপ্রসিদ্ধ বেরি৭ি সাহেবের একটা কথাতেই প্রকাশ। তিনি যখন এদেশ পৱিত্যাগ করেন তখন তাহার হোমিওপাথ বন্ধুগণ তাহার অভ্যর্থনার জন্ত এক সভা করিয়াছিলেন। উক্ত সভাতে ডাক্তার বেরিণি, অপরাপর কৰা বলির শেষে বলিলেন, “আমার আর এখানে পাকিবার প্রয়োজন নাই। স্বৰ্য্য যখন উদিত হয় তখন চক্সের অন্তগমনই শোভা পায়। মছেজ বঙ্গাকাশে উধিত হইয়াছেন, এখন আমার অন্তগমনের সময় ! অতএব