পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
২৭১

 বে শক্তি লইয়া উঠিতেছে তাহ৷ সামাৰ শক্তি নহে। বলিতে গেলে এই বস্তৃতা হইতেই কেশবচন্দ্রের প্রতিষ্ঠা বঙ্গসমাজে স্থাপিত হইয়া যায়।,

 এই বৎসরে তিনি ‘ব্রহ্মবন্ধু সভা” নামে একটী সভা স্থাপন ’করেন। অস্তঃপুরে স্ত্রীশিক্ষা বিস্তার তাঁহার অতিম উদেষ্ঠ ছিল। এই সভার সভ্যগণ। উৎসাহের সহিত নানা হিতকর বিষয়ের আলোচনাতে প্রবৃত্ত হন। ১৮৬৪ সালে কেশবচন্দ্র একজন বয়স্তা সহ মাদ্রাজ ও বোৱাই প্রদেশে প্রচারার্থ গমন করেন। তদবধি সে সকল প্রদেশে ব্রাহ্মধর্মের বীজ উপ্ত• হইয়া বৃক্ষে পরিণত হইয়াছে।

 বোম্বাই হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইয়া কেশবচন্দ্র দেবেন্দ্রনাথকে একটী প্রধান সংস্কার কাৰ্য্যে প্ৰবৃত্ত করিলেন। তৎপূর্বে উপবীতধারী উপাচার্যগণ ’ব্রা সমাজের বেদীতে আসীন হইয়া উপাসনাদি কাৰ্য্য নিপন্ন করিতেন। কেশব চত্রের প্ররোচনায় মহর্ষি তাহাদিগকে কষুচুত করিয়া দুইজন উপবীতত্যাগী উপাচার্যকে সেই পদে নিয়োগ করিলেন। এতদ্দার সমাজের প্রাচীন সভ্যগণের মনে বির’গ জন্মিল। গৃহারা মহর্ষির নিকট মনের হুঃখ প্রকাশ করিতে লাগিলেন। ওদিকে যুবকাল আর একটী অসমসাহসিক কাৰ্য্যে অগ্রসর হইলেন। তাহার৷ অসমবর্ণের দুই ব্যক্তিকে বিবাহ সম্বন্ধে আবদ্ধ করিলেন। দেবেন্দ্রনাথ কেশবচন্দ্রের প্রতি হাজার অমুর ক্ত হইলেওনিজে তৎপূৰ্বে উপবীত পরিত্যাগ করিলেও, এবং খুব কদলকে বিধিমতে উৎসাহদানে ইছুক থাকিলেও, এরূপ সমাজবিপ্লবধূচক কার্যের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। তথন ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা যুবকদলের হস্তে ছিল। তাহাতে এই বিবাহের সংবাদ প্রকাশিত। হইলে তিনি বিপ্লবের সূচনা দেখিয়া ভীত হইলেন; এবং যুবকদলকে সমাজ-সম্বন্ধীয় সৰ্ববিধ কর্তৃত্ব হইতে অস্তরিত করিবার জন্য প্রতিজারূঢ় হইলেন। কেশবচন্দ্র দেখিলেন ঘোর ঝটিকা আসিতেছে, তিনি তাহার জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিলেন। কলিকাতা লমাজের কর্তৃত্বভার তাহার হন্তের বাহিরে যায় দেথিয়, তিনি ব্রাহ্মধর্ম প্রচার বিভাগকে স্বতন্ত্ৰ করিয়া নিজ হস্তে রাখিবার জ্য “ব্রাহ্মপ্রতিনিধি সভ” নামে এক সভা গঠন করিতে। প্রবৃত্ত হইলেন; ব্রাহ্মধর্ম প্রচারার্থ “স্বৰ্ষতৰ’ নামক এক মাসিক পত্রিকা। বাহির করিপেন; এবং তাহার দৃষ্টস্তের অনুসরণ করিা যে কতিপয় যুবা বিষয় কৰ্ম্ম ত্যাগ পূৰ্বক ব্রাহ্মধর্ম প্রচারে আত্মসমৰ্পণ করিয়াছিলেন, তাই দিগকে লইয়া মহোৎসাহে প্রচার বিভাগ গঠনে প্রবৃত্ত হইলেন।