পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
২৭৫

অনেকে কল্যকার চিন্তা পরিত্যাগ. করিয়া প্রচার ব্রত গ্রহণ করিলেন; এবং অৰ্দ্ধাশনে ও অনশনে দিন কাটাইতে ও পাছকাবহীন পদে কলিকাতৃ সহরে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। এই প্রচারোৎসাহের ফলস্বরূপ দেশের রানাস্থানে ব্রাহ্মসমাজ স্থাপিত হইতে লাগিল; এবং ব্রাহ্মবিবাহের সংখ্যা বাড়িতে লাগিল।

 এই সাল হইতে কেশবচন্দ্রের নিজের ভবনে তাহার বয়স্তদিগকে লইয়া দৈনিক উপাসনা আরম্ভ হইল। এই দৈনিক উপাসনা হইতে নবব্যাকুলত৷ ও নবভক্তির সঞ্চার হইল। তাছার ফলস্বরূপ ইছারা মহাত্মা চৈতন্তের ভক্তিতত্ত্ব • আলোচনা করিতে লাগিলেন; এবং আপনাদের মধ্যে খোল করতাল সহ সংকীৰ্ত্তনের প্রথা প্ৰবৰ্ত্তিত করিলেন। আমনি সংবাদ পত্রে ব্রাহ্মেরা নেড়ানেড়ীর দল হইল বলিয়া চর্চা উঠিল।

 ১৮৬৮ সালের প্রারম্ভে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজের উপাসনা-মন্দির নিৰ্ম্মাণের জন্ত একখণ্ড ভূমি ক্রয় করিয়া উক্ত মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করা হইল। তদুপলক্ষে কেশবচন্দ্র সদলে নগরকীৰ্ত্তন করিয়া ভিত্তিস্থাপন করিতে গেলেন। এই ব্রাহ্মদিগের প্রথম নগর-কীৰ্ত্তন। সেই কীৰ্ত্তনের মধ্যে উন্নতিশীল ব্রাহ্মগণ জগতের নিকট এই ঘোষণা করিলেন;—

“নর নারী সাধারণের সমান অধিকার,
যার আছে ভক্তি, পাবে মুক্তি, নাহি জাত বিচার ”

 ইহাই অস্কাপি উন্নতিশীল ব্রাহ্মদলের মূলমন্ত্রস্বরূপ রহিয়াছে।

 এই ১৮৬৮ সালে ব্রাহ্মসমাজ মধ্যে এক মহ আন্দোলন উপস্থিত হয়। নবভক্তির আবির্ভাবে ব্রাহ্মদিগের অস্তরে আশ্চৰ্য্য বিনয়ের আবির্ভাব হয়। তাহার ফলস্বরূপ তাহাদের অনেকে পরম্পরের এবং বিশেষতঃ কেশবচন্দ্রের পদে ধরিয়া, পদধূলিগ্রহণ, পাদপ্রক্ষার্লন, সবিনয়ে ক্ৰন্দন প্রভৃতি আরম্ভ করেন। তাছা ভক্তি প্রকাশের আতিশয্য মাত্র। এই সময়ে কিছুদিনের জন্ত কেশৱচন্দ্র সপরিবারে মুঙ্গের সহরে বাস করিতেছিলেন। সেখানেই ঐ ভক্তির উচ্ছাস প্রধানরূপে প্রকাশ পায়। ইহাতে তাহার দলের দুইজন প্রচারক ব্রাহ্মসমাজ মধ্যে নরপূজার আবির্ভাব বলিরা প্রকাগু পত্রে আন্দোলন করিতে প্রবৃত্ত হন। এই আন্দোলনে অনেক ব্রাহ্ম ব্রাহ্মসমাজ পরিত্যাগ করেন।

 অল্পদিনের মধ্যে এই আন্দোলন নিরন্ত হইলে, ১৮৬৯ সালে কেশবচন্দ্র ভারতবর্ষীয় ব্রহ্মমন্দিরে উপাসনা প্রতিষ্ঠা করিতে সমর্থ হন।

 ১৮৭৭ সালে তিনি ইংলণ্ডে গমন করেন; এবং প্রান্ধ ছয় সাত মাল কাল