পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৭৮
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

 ফলতঃ, এই বিৰাদের পর ১৮৭৮ সাল হইতে ১৮৮৪ সাল পর্য্যস্ত এই পাঁচ বৎসরে তিনি ভগ্নগৃহের পুনর্গঠনের জন্ত ষেরূপ গুরুতর শ্রম করিয়াছিলেন তৎপূৰ্ব্বে বিশ বৎসরে তাহা করিয়াছিলেন কি না সন্দেহ। সেই শ্রমে র্তাহার শরীর ভয় হইয়া গেল। ১৮৮৩ হইত্তেই দারুণ বহুমূত্র রোগ ধরা পড়িল; এবং ১৮৮৪ সালের ৮ই জানুয়ারি দিবসের প্রাতে প্রাণবায়ু তাহার শ্রান্ত ক্লাস্ত দেহকে পরিত্যাগ করিয়া গেল।


দীনবন্ধু মিত্র।

 মাইকেল মধুসূদন দত্ত যে কেবল মাত্র গুপ্ত কবি কর্তৃক দৃঢ়ীকৃত মিত্রাক্ষর নিগড় হইতে বঙ্গ-কবিতাকে উদ্ধার করিবার প্রয়াস পাইয়াছিলেন তাহা নহে; “নাটুকে” রামনারারণের অবলম্বিত নাট্যকাব্যের রীতি হইতেও বঙ্গীর নাট্যকাব্যকে উদ্ধার করিবার প্রয়াস পাইয়াছিলেন। ইহা অগ্ৰেই প্রদর্শন করিয়াছি। তাহার প্রণীত শৰ্ম্মিষ্ঠা ও কৃষ্ণকুমারী নাট্যকাব্যের নুতন পথ প্রদর্শন করিয়া যার। এই নুতন পথে অগ্রসর হইয় অনেকে নাটক রচনা করিবার জন্ত প্রয়ঃসী হন। তন্মধ্যে দীনবন্ধু মিত্রই সমধিক প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছেন। ইহার প্রণীত নাটক সকল সে সমরে বঙ্গীয় পাঠক সমাজে প্রচুর সমাদর পাইয়াছিল। আমাদের সাহিত্য জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রদিগের মধ্যে ইনিও একজন। যে সমরে কেশবচন্দ্র সেন বাঙ্গালি জাতির নব শক্তি ও নব আকাঙ্ক্ষার উন্মেষের মুখপাত্র স্বরূপ হইয়া দাড়াইয়াছিলেন, যে দমরে বঙ্কিমচন্দ্র ও “বঙ্গদর্শন আমাদের চিন্তার এতটা স্থান অধিকার করিয়াছিলেন, সেই সময়ে দীনবন্ধু আর এক দিক দিয়া সেই উন্মেষে সহায়তা করিয়াছিলেন তাহাতে সন্দেহ নাই। সেইজন্ত এ কালের প্রধান পুরুষদিগের মধ্যে র্তাহারও জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত দিভে অগ্রসর হইতেছি।

 দীনবন্ধু বাঙ্গাল ১২৩৬ বা ইংরাজী ১৮২৯ সালে কলিকাতার অদূরবর্তী চৌবেড়িয়া নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাহার পিতার নাম কালাচাঁদ মিত্র। কালাচাদ মিত্ৰ সামান্ত বিষয় কৰ্ম্ম করিয়৷ অক্তি কষ্টে সংসার যাত্রা নিৰ্ব্বাহ করিতেন। র্তাহার এরূপ সামর্থ্য ছিল না যে নিজ পুত্রের উচ্চ শিক্ষার ব্যয় নিৰ্ব্বাহ করেন; সুতরাং তিনি বালে দীনবন্ধুকে গ্রাম্য পাঠশালাভে সামান্তরূপ জমিদারি হিসাব শিখাইস্থা অল্প বয়সেই তাহাকে বিধৱ কৰ্ম্মে নিযুক্ত