পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২২৫
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

পরিত্যাগ করিয়া নাটক রচনাকে আপনার প্রতিভা বিকাশের উপায়রূপে অবলম্বন করেন।

 ১৮৫৬ সালে দীনবন্ধু কলেজ ইইতে বাহির হক্টর গবর্ণনেটের অধীনে ডাক বিভাগে কষ্ম করিতে প্রত্নত্ত হন। এভং হুত্রে তিনি উড়িষ্যা, নদীয়া, ঢাকা, কুমিল্লা, লুশাই পাহাড়, প্রভৃতি নানাস্থানে ভ্রমণ করেন। তিনি রাজকাৰ্য্য বিষয়ে যেরূপ দক্ষতা প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তাহার জন্তই •প্রধান প্রধান কাজের ভার তাহার উপরে ন্যস্ত হইত। ১৮৭১ সালে লুশাই যুদ্ধ বাধিলে, ডাকের বন্দোবস্ত করিবার ভার তাহার উপরেই অৰ্পিত হইয়াছিল। এই সকল কাৰ্য্য সমুচিত রূপে নিৰ্ব্বাহ করিয়া তিনি গবর্ণমেণ্টের নিকট হইতে ‘রায় বাহাদুর’ উপাধি প্রাপ্ত হইয়াছিলেন।

 গবর্ণমেণ্টের কার্য্যোপলক্ষে যে তিনি নানা স্থানে ভ্রমণ ও নানা শ্রেণীর লোকের সহিত পরিচয় ও আত্মীয়তা করিতে পারিয়াছিলেন, তাহাই তাহার নাটক রচনার পক্ষে বিশেষ সাহায্য করিয়াছিল। এরূপ অভিজ্ঞতা, এরূপ মানব-চরিত্র দর্শন, ও এরূপ বিবিধ-সামাজিক অবস্থার জ্ঞান আর কাহারও হয় নাই। তাঙ্গার রচিত নাটক সকলে আমরা এই সকলের যথেষ্ট পরিচয় প্রাপ্ত হই।

 ১৮৫৯ সালে যখন নদীয়া ও যশোহর প্রভৃতি জেলার প্রজাগণের সহিত নীলকরদিগের ঘোর বিবাদ উপস্থিত হইয়া প্রজাদিগের ধর্মঘট চলিতেছিল, তখন দীনবন্ধু ঢাকাতে ছিলেন। তিনি তৎপূৰ্ব্বে নিজে অনেক নীল-প্ৰপীড়িত স্থানে ভ্রমণ করিয়া প্রজাদের দুঃখ স্বচক্ষে দর্শন করিয়াছিলেন। সে সময়ে হিন্দুপেটিয়টের পৃষ্ঠায় হরিশ্চন্দ্র তাহার ওজস্বিনী ভাষাতে প্রজাদের দুঃখের যে সকল চিত্র অঙ্কিত করিতেছিলেন, সে সকল চিত্রের অধিকাংশ দীনবন্ধুর নিজের পরীক্ষিত ছিল। সুতরাং প্রজাদের দুঃখ স্মরণ করিয়া দেশহিতৈষী মাত্রেরই হৃদয় যে আগুন তখন জলিয়াছিল, তাহ তাহার ও হৃদয়ে জলতেছিল। হৃদয়ের সেই অগ্নি লইয়াই তিনি “নীল-দৰ্পণ” লিখিবার জন্য লেখনী ধারণ করিয়াছিলেন। অগ্ৰেই বলিয়াছি, ১৮৬০ সালের শেষভাগে ঢাকা হইতে নীলদর্পণ প্রকাশিত হয়। বঙ্গদেশীয় গবর্ণমেণ্টের প্রধান কৰ্ম্মচারীদের অনুমতিক্রমে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, ইহা ইংরাজীতে অনুবাদ করেন, এবং রেভারেও ঙ্কেনস লং সাহেব তাহ নিজের নামে মুদ্রিত করেন। তাহ লইয়া যে মোকদ্দমা উপস্থিত হয়, এবং সদাশয় লং সাহেবের যে এক হাজার টাকা জরিমান ও