পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৮২
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

রুসনায়ু বিরাজিত ধৰ্ম্ম উপদেশ।
একদিন তার কাছে করিলে যাপন,
দশদিন থাকে ভাল দুৰ্ব্বিণীত মন।
বিদ্যা বিতরণে তিনি সদা হরষিত,
র্তার নাম রামতনু সকল বিদিত।

 “একদিন তার কাছে করিলে যাপন, দশদিন থাকে ভাল দুৰ্ব্বিণীত মন।” এই বাক্যগুলি লাহিড়ী মহাশয়ের কি অকৃত্রিম সাধুতারই পরিচয় দিতেছে! সাধুতার কত প্রকার লক্ষণ শুনিয়াছি তন্মধ্যে একটা প্রধান এই যে “তিনিই সাধু যার সঙ্গে বসলে হৃদয়ের অসাধু ভাব সকল লজ্জা পায়, ও সাধুভাব সকল জাগিয়া উঠে”। প্রকৃত সাধুর নিকটে বসিয়া উঠিয়া আসিবার সময় অনুভব করিতে হয়, যেরূপ মানুষটা গিয়াছিলাম, তাহা অপেক্ষ উৎকৃষ্ট মানুষ হইয়া ফিরিতেছি। দীনবন্ধু সাক্ষ্য দিতেছেন যে লাহিড়ী মহাশয়ের এরূপ সাধুতা ছিল, যে তাহার সহবাসে একদিন যাপন করিয়া আসিলে দশদিন হৃদয় মনের উন্নত অবস্থা থাকিত। এটা স্মরণ করিয়া রাখিবার মত কথা।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

 ১৮৩৮ খ্ৰীষ্টাব্দে নৈহাটর সন্নিহিত কাঠালপাড়া নামক গ্রামে বঙ্কিমচন্দ্রেয় জন্ম হয়। র্তাহার পিতা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বহুদিন ইংরাজ গবর্ণমেণ্টের অধীনে ডেপুটী কালেক্টরের কাজ করিতেন।

 বাল্যকালে বঙ্কিমচন্দ্র হুগলী-কালেজে পাঠ করেন। সেখানে পাঠ করিবার সময়েই র্তাহার বঙ্গ-সাহিত্যের প্রতি দৃষ্টি পড়ে। সে সময়ে কবিবর ঈশ্বর চন্দ্র গুপ্তের প্রাদুর্ভাবের ফাল। তখন প্রতিভাশালী ব্যক্তি মাত্রেই সাহিত্যজগতে কিছু করিতে ইচ্ছুক হইলে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের শিষ্যত্ব স্বীকার করিতেন। গুপ্ত কবিও তথন প্রতিভার উৎসাহদাতা ছিলেন। অগ্ৰেই বলিয়াছি, তিনি অক্ষয় কুমার দত্তের উৎসাহদাতাদিগের মধ্যে একজন ছিলেন। কিন্তু কাব্যজগতে র্তাহার শিষ্যবর্গের মধ্যে, মঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, মনেীমোহন বন, দ্বায় কানাথ অধিকারী, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যার, দীনবন্ধু মিত্র প্রভৃতি সমধিক প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন। তৎকালপ্রচলিত রীতি অনুসারে বঙ্কিম প্রথমে “প্রভাকরে”