পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৩৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩১২
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

করিয়া অস্তঃপুরবাসিনী। মহিলাদিগের পাঠের ব্যবস্থা এবং পরীক্ষা ও পারি তোষিক প্রদানের ব্যবস্থা করিলেন। শুনিতে পাওয়া যায় এই বিষরে। ইহাদেয় কৃতকাৰ্য্যতা দেখিয়া। গবৰ্ণমেন্ট ও নাকি ১৫০ টাকা সাহায্য দিয়াছিলেন।

১৮৭৩ সালের ফাৰ্বন মাসে নবকাস্ত চট্টোপাধ্যায় ও তাহার ভ্রাতা নিশিকান্ত। চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে “অ্যাল্য বিবাহ নিবারিণী সভা” নামে এক সভা স্থাপিত। হইল। ঢাকা কালেজের অধ্যাপক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় মহাশয় ঐ সভার সভাপতি হইলেন। ইহাতেই প্রমাণ যে ওই সভ৷ সকল শ্রেণীর উদার-ভাবাপন্ন ব্যক্তিদিগকে লইয়াই স্থাপিত হইয়াছিল। কিছু দিন পরে এই সভাত সভ্যগণ “মহাপাপ বাল্যবিবাহ” নামে এক মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। নবকান্ত বাবু ঐ পত্রের সম্পাদকতা ভার গ্রহণ করেন। এরপ তাজ। তাজা মনের ভাব। প্রকাশক, হৃদয় মনের তন্ময়তা-সূচক পত্রিক। আমরা অল্পই পড়িয়াছি। তাহার ফল কোথার যাইবে! দেথিতে দেথিতে ঢাকার যুবকদলের, বিশেষতঃ ব্ৰাহ্মদলের, মধ্যে মহোৎসাহের লক্ষণ সকল প্রকাশ পাইতে লাগিল। একদিকে ব্রাহ্মযুবকগণ জাতিভেদ বর্জন করিয়া, মুসলমানের সহিত। আহারাদি করিয়া, সমাজ হইতে বর্জিত হইলেন; এবং ঘোর নির্যাতন সহ্য করিতে লাগিলেন; অপর দিকে আশ্রয়গ্ৰহণার্থিনী কুলীন কন্যাদিগকে ও হিন্দু বিধবাদিগকে আশ্রয় দিয়া৷ ব্রাহ্মসমাজে আনিবার জন্য বদ্ধপরিকর হইলেন। তাহার এক একটী ঘটনা। যেন কোনও অস্তৃত উপঠাসের এক এক পরিচ্ছেদের চায়। এক একটী বিধবা বা কুলীন কুমারীকে উদ্ধার করিতে গিয়া যুবকদিগের অনেকে প্ৰাণ পৰ্য্যন্ত পণ করিতে লাগিলেন। একটী কুলীন কুমারীকে আসন্ন বছবিরাহের বিপদ হইতে উদ্ধার করিয়া কলিকাতায় প্রেরণ করাতে, একজন যুবক, ঐ কন্যার অভিভাবকগণের প্রেরিত ওস্তার লগুড়াঘাতে মাথ: ফাটিয়া, মৃত্যু শয্যায় শারিত হইলেন॥ তথাপ্লি তাহাদের উৎসাহের বিরাম হইল না।

আর একটী। পলারিতা ও আশ্ৰয়াথিনী কুলটার ক্যাকে আশ্রয় দে ওয়াতে নবকান্ত চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে উপস্থিত হইতে হইল। সৌভাগ্যক্রমে। ইংরাজ বিচারপতির বিচারে ঐ ক্যার আভিভাবকতা আর তাহার মাতার হস্ত হইতে লইয়া নবকান্ত বাবুর প্রতি অর্পিত হইল।

নবকান্ত চট্টোপাধ্যায় স্বদেশ-প্রেমিক মানুষ ছিলেন। নিজে ধনী ব্রহ্মণ। গৃহস্থের সস্তান হইয়াও যখন দারিদ্র্যে পড়িলেন, তখন দরিদ্র ভদ্রসভানদিগকে