পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ।
৩৩৯

কিরূপ হইবে, কার জন্ত কি করা উচিত, আমাদের সঙ্গে এই কথাই উপস্থিত করিতেন।

 এদিকে এই সময়ে পূৰ্ব্ববঙ্গের মান স্থান হইতে কতকগুলি হিন্দু বিধবা পলাইয়া ব্রাহ্মসমাজের আশ্রয়ে আসল তাহারা যায় কোথায়? দুর্গামোহন দাসের ভবন তাহদের পিতৃভবন স্বরূপ হইল। ব্রহ্মময়ীর পক্ষপুটের মধ্যে আশ্রয় প্রাপ্ত হইয়া তাহার শিক্ষা লাভ করিতে লাগিল। এই রিধবাদিগের অনেকে পরে পরিণীত হইয়া সৎপত্রিগত হইয়াছে।

 এইরূপ সদনুষ্ঠানে নিযুক্ত থাকিতে থাকিতে অনুমান ১৮৭৫ সালে ব্রহ্মময়ী এলোক’হইতে অবস্থত হইলেন। দুর্গামোহনের গৃহ শূন্ত হইল।

 ইহার পরে ১৮৭৮ সালে ব্রহ্মসমাজে দ্বিতীয় বিবাদ ঘটনা হইয়া সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ যখন স্থাপিত হয়, তখন দাস মহাশর ঐ সমাজ স্থাপনের উদ্যোগী পুরুষদিগের মধ্যে একজন অগ্রণী ব্যক্তি ছিলেন। * তদবধি বহুকাল ইহার কাণ্যের জঙ্গ তিনি প্রচুর অর্থ-সাহায্য করিরছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর কিছুদিন পূৰ্ব্বে ইহার সভাপতিরূপে বৃত হইরাছিলেন। ১৮৮৮ সালে তিনি টুংগণ্ডে গমন করেন, এবং পীড়িত হইয়া দেশে প্রতিনিবৃত্ত হন। ইহার পরে তাহার তিন কন্ত সংপাত্রগত হইলে এবং তাহার তিন পুত্র बिलार्ड হইতে বারিমুর হইয়া আসিয়া স্বীয় স্বীয় কার্য্যে বর্সিলে, তিনি নিতান্ত একাকী হইয় পড়েন। সেই সময়ে ঢাকার কালীনারায়ণ গুপ্ত মহাশূরের এক বিধবা কন্যার পাণিগ্রহণ করেন। এই বিবাহেও তাহাকে নির্যাতন সহিতে হইয়াছিল। তাঁহার চিরাগত রীতি অনুসারে দুর্গামোহন সমুদয় নির্ধ্যাতন অক্সান-চিত্তে বহন করিলেন; এবং নব-পরিণীত পত্নীর সহিত সুখে কালাতিপাত করিতে লাগিলেন।

 কিন্তু এ সুখ অধিক কাল ভোগ করিতে পারিলেন না। কয়েক বৎসরেয় মধ্যেই তাহার স্বাস্থা ভগ্ন হইয়া গেল। তিনি স্বাস্থ্যলাভের আশার দেশ বিদেশে ভ্রমণ করিলেন। কিছুতেই আর ভগ্ন স্বাস্থ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হইল না। অবশেষে ১৮৯৭ সালের ১৯শে ডিসেম্বর ভবলীলা সম্বরণ করলেন।

 ইহঁার সহৃদয়তা ও মুক্তহস্ততা বন্ধুগণের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিল। যে কথা সেই কাজ; যদি ইনি কখনও মুগ্ধ দিয়া কিছু দিব বলিয়া কথা বাহির করিতেন আমরা জানিতাম দে টাকা ব্যায়ে আছে। দরিদ্রদিগের, বিশেষতঃ স্বীর পরিচিত দুঃস্থ ব্যক্তিগণের, সাহায্যাৰ্থ এরূপ মুক্তহস্ত দাতা অতি অল্পই দেখা গিয়াছে। ব্রাহ্মসমাজের কার্য্যে ইনি সহস্ৰ সহস্র টাকা দান করিয়াছেন।