একদিকে ব্যাপৃত ছিল। ১৮৭৮ সালে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইহার প্রতিষ্ঠার সময় তিনি ইহার একজন প্রধান সারথি ছিলেন। প্রতিষ্ঠার পূৰ্ব্বে ইহার উদ্যোগকারী ব্রাহ্মগণ “সমালোচক” নামে একখানি সাপ্তহিক পত্ৰ প্রকাশ করেন। অল্পদিন পরেই তিনি তাহার সম্পাদকতা ভার গ্রহণ করিয়া তাহাতে অগ্নি উদগীরণ করিতে আরম্ভ করিলেন। কেবল তাহ নহে, সে সময়ের বিবাদ বিলম্বাদে তিনি অগ্রণী হইতে লাগিলেন। বিবঙ্গ অনেকেই করিয়াছিল, কিন্তু অপরের বিবাদে আর দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যান্ধের বিবাদে একটু প্রভেদ ছিল। অন্তে বিবাদ করে, এবং বিবাদের পশ্চাতে বিদ্বেষ রাখে; গাঙ্গুলি ভায়ার বিবাদে তীব্রত থাকিত, কটুক্তি থাকিত, উচিত কথা বলা থাকিত, শুনিলে মনে হইত শকুনি যেমন মৃত প্রাণীর পেট পা দিয়া চাপিয়া ভিতরকার নাড়িজুড়ি বাহির করে, তেমনি যেন তিনি বিপক্ষের পেটু চাপিয়া ঠোঁট দিয়া নাড়িভুড়ি বাহির করিতে পারেন, কিন্তু ফলতঃ বিদ্বেষবুদ্ধি তাহার মনের ত্রিসীমায় থাকিত না। তিনি বলিবার যাহা বলিলেন, প্রতিবাদীর মুখের উপরেই বলিলেন; করিবার যাহা করিলেন, দশজনের সমক্ষেই করিলেন; তৎপরেই আর কিছুই নাই, বিদ্বেষ লইয়া ঘরে আসিলেন না। এই গুণের জন্তই আমরা তাহাকে ভালবাসিতাম। তাঁহার কথা বা ব্যবহারে ক্লেশ পান নাই, এমন অল্প লোকই আমাদের মধ্যে আছেন; কিন্তু এসকল সত্ত্বেও তাহাকে অস্তরের সহিত শ্রদ্ধা করিতেন না, এমন কাহাকেও দেখি নাই। তিনি তৎপরে কয়েক বৎসর সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সম্পাদক ছিলেন।
অবলাবান্ধব ও বঙ্গমহিলা বিদ্যালয় উঠিয়া গেলে তাহার নারীজাতির উন্নতি সম্বন্ধীয় কাৰ্য্য শেষ হয় নাই। কিছু দিন পূর্বে তাহার প্রথম পত্নীর মৃত্যু হইয়া, ছিল। তাহার পরে বহুদিন তিনি দীরপরিগ্রহ করেন নাই। অবশেষে তদানীন্তন লব্ধপ্রতিষ্ঠা উচ্চশিক্ষিত কাদম্বিনী বস্থায় পাণিগ্রহণ করেন। কুমারী কাদম্বিনী ১৮৮৩ সালে বি, এ, পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হন। গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় কিছুদিন পরে, তাহাকে বিবাহ করিয়া, তাহাকে মেডিকেল কলেজে ভৰ্ত্তি হইষায় জন্ত উৎসাহিত করিয়া তোলেন। প্রথমতঃ চাহারি প্ররোচনাতে কাদম্বিনী মেডিকেল কলেজে প্রবেশ করেন; এবং সেখান হইতে বাহির হইয়া চিকিৎসা বিদ্যা শিক্ষা “সমাধা করিবার জন্য ইংলণ্ডে গমন করেন; এবং সেখান হইতে উপাধিলাভ করিয়া স্বদেশে ফিরিয়া চিকিৎসা কার্য্যে প্রবৃত্ত হন।
কেবল রাজনীতির চর্চা এবং ধৰ্ম্ম ও সমাজ সংস্কারেই যে গাঙ্গুলি মহাশয়েম