পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৪৮
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

র্তাহার পিতার মৃত্যু হয়। ১৮৬৭ সালের প্রারম্ভ হইতে তিনি কলিকাতা হাইকোর্টে বারিটারি কার্ষ্য আরম্ভ করেন। বাষ্টিারি আরম্ভ করিবামাত্র তাহার প্রতিভা উক্ত কোর্টের জজদিগের এবং দেশের লোকের নয়নগোচর হইল। তিনি অল্পদিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করিলেন; এবং ফৌজদারী মোকদম বিষয়ে একজন সুবিজ্ঞ বারিষ্টার হইয়া উঠিলেন। তিনি হাইকোর্টের সুপ্রসিদ্ধ বিচারপতি ফিয়ার সাহেব প্রভৃতি সন্ত্রান্ত ইংরাজগণের প্রিয়পাত্র হইলেন।

 কিন্তু যেজন্য তিনি বঙ্গদেশের উপকারী বন্ধুরূপে পরিগণিত হইলেন, তাহা তাঁহার স্বদেশ-হিতৈষিত। তিনি স্বদেশে পদার্পণ করিয়াই স্ত্রীশিক্ষার উন্নতি বিধান বিষয়ে মনোযোগী হইলেন। মৃত্যুকাল পর্য্যন্ত এবিষয়ে তাহার মনোযোগ অবিশ্রান্ত ছিল। তিনি মরণের দিন পর্যন্ত বেথুন কলেজের সম্পাদকের পদে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি বিলাত হইতে প্রতিনিবৃত্ত হইয়া প্রথমে আপনার পত্নীর শিক্ষার বিষয়ে মনোযোগী হইলেন। তখন স্বদেশীয়দিগের মধ্যে বালিকাদিগের উচ্চ শিক্ষার স্থান ছিল না। তিনি শিক্ষা-বিধানার্থ আপনার পত্নীকে লোরেটোকনভেণ্ট নামক সন্ন্যাসিনীদিগের আশ্রমে রাখিলেন। এই সময়ে তাহার যে সংযম, মিতাচার ও স্বকৰ্ত্তব্য-সাধনে দৃঢ়মতি দেখা গিয়াছিল, তাহ অতীব প্রশংসনীয়। কেশবচন্দ্র সেন মহাশয়ের মুখে ঘোষজ মহাশয়ের এই সময়কার সাধুতা ও সত্যনিষ্ঠার ভূয়সী প্রশংসা শুনিয়াছি।

 পত্নীকে শিক্ষিত করিয়া লইয়া তিনি সংসার পাতিয়া বসিলেন; এবং বিবিধ প্রকারে স্বদেশের উন্নতি বিষয়ে মনোনিবেশ করিলেন। তন্মধ্যে একুট কাজ তিনি করিতে লাগিলেন যেজন্ত স্বদেশের লোকের অনুরাগভাজন হইলেন। যে সকল স্থলে তিনি দেখিতেন যে কোনও লোক রাজকৰ্ম্মচারীদের অবিচারে বা অত্যাচাৰুে ক্লেশ পাইতেছে, সে সকল স্থলে তাহদের পক্ষ। অবলম্বন করিয়া নিজের আইনজ্ঞতার দ্বারা তাহাদিগকে রক্ষা করিবার প্রয়াস পাইতেন। এজন্ত তিনি গুরুতর শ্রম করিতে কাতর হইতেন না। ঐ সকল মোকদম এরূপ দক্ষতার-সন্ধিত চালাইতেন যে অধিকাংশ স্থলেই জয়লাভ করিতেন; এবং দেশে ধন্য ধন্ত রৰ উঠিয়া, যাইত। এইরূপে তাহার পরিচালিত অনেক মোকদ্দমা আইনজ্ঞ ব্যক্তিদিগের মধ্যে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছে।

 ১৮৭২ সালে নারীগণের উচ্চশিক্ষা লইয়া উন্নতিশীল ব্রাহ্মদলে যখন