পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
চতুর্দশ পরিচ্ছেদ।
৩৫৩

সকল শ্রেণীর লোককে নিমন্ত্ৰণ করিয়া অন্নপ্রাশন ক্রিয়াসমারোহের সহিত সম্পন্ন করা হইরাছিল।

 সে সময়ে কিছুদিনের জন্ত লাহিড়ী মহাশয় গোবরডাঙ্গার প্রসিদ্ধ ধনী পরিবার, মুখুয্যে বাবুদের, বাড়ীতে নাবালক পুত্ৰগণের অভিভাবকতা কার্য্যে নিযুক্ত ছিলেন। তাঁহার চরিত্রের খ্যাতি দেশমধ্যে এরূপ ব্যাপ্ত ছিল, যে অভিভাবক কাহাকে করা যাইবে, এই প্রশ্ন উঠিলে গবৰ্ণমেণ্টের পরামর্শক্রমে তাহাকেই নিযুক্ত করা হইয়াছিল। তিনি তদুপলক্ষে কিছুদিন গোবরডাঙ্গাতে বাণ করিয়াছিলেন। তিনি যেখানেই গিয়াছেন সেই খানেই আপনার স্কৃতি রাখিয় আঁসিয়াছেন। সুতরাং গোবরডাঙ্গাতেও যে নিজের স্মৃতি রাখিয়াছেন তাহ বলা বাহুল্য মাত্র। তাহার প্রমাণ স্বরূপ খাটুরা ব্রাহ্মসমাজের মুদিত বিবরণ হইতে নিম্নলিখিত কয়েক পক্তি উদ্ধৃত করিতেছি —

 “কৃষ্ণনগর নিবাসী স্বপ্রসিদ্ধ বাবু রামতনু লাহিড়ী, লেপ্টনাণ্ট গবর্ণর কর্তৃক গোবরডাঙ্গার নাবালক জমিদারগণের অভিভাবক নিযুক্ত হন। তাঁহার গোবরডাঙ্গায় অবস্থিতি, কালে তিনি সৰ্ব্বদা খাটুৱা-দত্তবাটীর ব্রাহ্মবন্ধুর সহিত সৰ্ব্ব-বিষয়ে যোগদান করিয়া যথেষ্ট উৎসাহ প্রদান করেন। একজন বিজ্ঞ প্রাচীন সন্ত্রান্ত লোক, চিয় প্রচলিত জাতি, কুসংস্কার প্রভৃতি অগ্রাহ করিয়া, যুবক ব্রান্ধের সহিত সকল বিষয়ে যোগদান করিতেছেন, ইহা পল্লীগ্রামের মধ্যে একটা সম্পূর্ণ নূতন ব্যাপার। তাঁহার এরূপ কাৰ্য্য দেখিয়া লোকে আশ্চৰ্য্যান্বিত হইত; কিন্তু তাঁহার প্রতি শ্রদ্ধাবশতঃ নিন্দ-স্বচক কোন কথা কেহ ব্যক্ত করিত না। যেরূপ লোক কখনও উপাসনায় যোগ দেন নাই, তাঁহার আহবানে এমন ব্যক্তিও সে সময়ে উপাসনায় যোগ দিয়াছেন। প্রাচীন সংস্কারাপন্ন যে সকল হিন্দুদিগের ব্রাহ্মদিগের সহিত বিচ্ছিন্ন ভাব ছিল, তিনি সেই সকল সন্ত্রান্ত হিন্দুদিগের প্রত্যেকের বাটতে গিয়া উদারভাবে মিশিয়া তাঁহাদিগের সদ্ভাব আকর্ষণ করিয়াছিলেন। তাহার অবস্থিতিতে এই প্রকারে যথেষ্ট উপকার হইরাছিল।”

 ১৮৬৯ সালে কলিকাতা সহরে লাহিড়ী মুহাশয়ের ভ্রাতুষ্পপুত্ৰী, পরলোকগত দ্বারকানাথ লাহিড়ী মহাশয়ের জ্যেষ্ঠ কন্যা, অন্নদায়িনীর বিবাহ ব্ৰাহ্মপদ্ধতিঅনুসারে সম্পন্ন হয়। অগ্ৰেই স্বশিরছি দ্বারকানাথ লাহিড়ী উত্তরকালে খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মে দীক্ষিত হন। কিন্তু তাহার গৃহিণী বা কন্যাগণকে খ্ৰীষ্টীয় ধৰ্ম্মে দীক্ষিত করিবার পূৰ্ব্বেই তিনি এলোক হইতে অবস্বর্ত হন। পিতার মৃত্যুর