পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৫৪
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

পর তাহার হই কঠা অন্নদায়িনী ও রাধারাণী কলিকাতাতে আনীত হন; এবং লাহিড়ী মহাশয়ের অভিভাবকতার অধীনে রক্ষিতা হন। ভূতরাং লাহিড়ী। মহাশয়, কঠাকওঁ হইয়া এই বিবাহক্রিয়া সম্পন্ন করেন। কলিকাতা নিবাসী সুপরিচিত ব্রাহ্ম হরগোপাল সরকারের সহিত অন্নদায়িনীর বিবাহ হর। এই সময় হইতে ব্রহ্মদিগের সহিত ও ব্রাহ্মসমাজের সহিত লাহিড়ী মহাশয়ের পরিচয় ও ঘনিষ্ঠ বইতে আরম্ভ হয়। ১৮৬৯ সাল হইতে তিনি মধ্যে মধ্যে কঞ্চনগর হইতে কলিকাতাতে আসিতেন; এবং প্রায় প্তাহার ভ্রাতুস্ত্রীদিগের গৃহে বাস। করিতেন॥ সেই সম্পর্কে উন্নতিশীল ব্রাহ্মদলের সহিত তাহার আলাপ ও আত্মীয়তা বদ্ধিত হইতে থাকে। এই সময়ে আমিও তাহার সহিত পরিচিত হই। আমার বেশ স্মরণ আছে, যখন তিনি নব ব্ৰহ্মাদলকে দেখিলেন, তখন আননিত হইয়া সর্বদবলিতেন, ‘হাৱ! রসিককৃষ্ণ ও রামগোপাল। যদি এখন খাকিতেন, তাহা হইলে একবার এই যুব কদিগকে লাইয়া দেখাইয়া বলিতাম, “দেখ তোমরা দেশে যেরূপ অগ্রসর দল দেথিবীর জ্য প্রার্থনা করিয়াছিলে, সেরূপ দল দেখা দিয়াছে”।

 এই সময়ের কয়েক দিনের কয়েকটী ঘটনা আমার স্মৃতিতে আছে। প্রথম, অন্নদায়িনীর বিবাহের নিমন্ত্রণ পত্র যখন বাহির হয়, তখন তিনি। আমাদিগকে ঊাহার বন্ধুবান্ধবের একটী তালিকা প্রস্তুত করিতে বলিলেন। তাহার বন্ধু বান্ধব সকল শ্রেণীর মধ্যেই ছিলেন, এবং আমরা তাহাদের অনেকের নাম জানিতাম, সুতরাং আমরা একটা তালিকা প্রস্তুত করি লাম। পাঠ করিয়া তিনি তাহাতে অনেক নাম যোগ করিয়া দিলেন। কিছ কলিকাতার একজন প্রসিদ্ধ পদস্থ লোকের নাম আমাদের কৃত 'তালিকা হইতে কাটিয়া দিলেন। আমরা বিস্ময়াবিষ্ট হইয়া গেলাম। কারণ। উক্ত ভদ্রলোকটীর সহিত যে তাহার বিশেষ আত্মীয়তা ‘আছে, তাহা আমরা মানিতাম। এমন কি প্রায় প্রতিদিন তাহার বাড়ীতে যাইতেন; এবং সেখানে চা প্রভৃতি গাইতেন। নিমন্ত্ৰিত। ব্যক্তিদিগের তালিকা হইতে তাহার নাম তুলিয়া দেওয়াতে আমরা আশ্চৰ্য্য বোধ করিলাম। কারণ জিজ্ঞাসা করাতে আমাদিগকে কিছু ভাঙ্গিয়া বলিলেন না। এই মাত্র বলিলেন –"তোমাদের শুনিয়া কাজ নাই, আমি ওঁকে নিমন্ত্রণ করকে! না।” পরে পরম্পরাতে জানিতে পারিলাম, সেই ভদ্রলোকটী মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের ক্যার ৰিবাহে নিমন্ত্রিত হইয়া গিয়া ৰহ্মোপাসনা-কালে পার্থের ঘরে বসিয়া তামাক