পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৪৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৬০
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ

ইংরাজীতে Well-Wisher ও বাঙ্গালাতে হিতসাধক” নামে মাসিক পত্রিকা বাহির হইত; তাছাতে সুরাপানের অনিষ্ঠকারিভাবিশেষরূপে প্রতিপাদিত হইত। তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন প্রভৃতি বিশিষ্ট ব্যক্তিদিগকে এই কার্যোর সহায় করিয়া লইয়াছিলেন : ' বলিতে কি তিনিই আমাদিগকে সুরাপানের বিরোধী করিয়া রাখিরা গিয়াছেন। ১৮৭৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সরকার মহাশয় দেহত্যাগ করেন। মৃত্যুকাল পর্য্যস্ত দেশের হিতচিন্তা তাহার হৃদয়কে পরিত্যাগ করে নাই। তাহাকে লাহিড়ী মহাশয় বড় তাল বাসিতেন। ইহাদের সহবাসে তিনি বড়ই সুখী হইরাছিলেন। কিন্তু সে সুখ তাহার অধিক দিন থাকিল না। তাহার জ্যেষ্ঠপুত্র নবকুমার এই সময়ে মুখ্যাতির সহিত কলিকাতা মেডিকেল কলেজে পড়িতেছিলেন। বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজন সকলেই তাহার মুখের দিকে চাহিয়া রহিয়াছিলেন হঠাৎ সে আশাতে নিরাশ হইতে হইল।

 এই সময়ে নবকুমারের যক্ষ্মারোগের লক্ষণ প্রকাশ পাইল। তিনি স্বীয় পাঠ্য বিষয়ে কৃতী হইবার জন্ত গুরুতর শ্রম করিতেন ! সে শ্রম সহ্য হইল না ! পূৰ্ব্বোক্ত উৎকট ব্যাধির সূঞ্চার হইল। লাহিড়ী মহাশয় সংবাদ পাইয়া কৃষ্ণনগর হইতে ছুটিয়া আসিলেন; কেশবচন্দ্র সেন মহাশয়কে সঙ্গে করিয়া নবকুমারের বাসাতে গেলেন; এবং মেডিকেল কলেজের তদানীন্তন প্রিন্সিপাল ডাক্তার নৰ্ম্মান চিভার্সের সহিত সাক্ষাৎ করলেন। ১৮৫২-৫৩ সালে বালীতে অবস্থান কালে ডাক্তার চিভার্সের সহিত তাহার পরিচয় ও অস্ত্রীয়তা হয়। সেই আত্মীযুতাস্থত্রে ডাক্তায় চিভার্স এই সমরে তাহাকে বিধিমতে সাহায্য aকরিতে প্রবৃত্ত হইলেন। নবকুমারকে কালীচরণ ঘোষ মহাশয়ের বাসাতে লওয়া হইল। সেখানে রাৰ্থিয়া চিকিৎসা, শুশ্রুয, যত্নের দ্বারা যাহা হইতে পারে সকলি হইতে লাগিল।

 কিন্তু কিছুতেই রোধের উপশম দেখা গেল না। অবশেলে তাহাকে কৃষ্ণনগরে লইয়া যাওয়া স্থির হইল। নবকুমার কৃষ্ণনগরে গেলেন, সেই সঙ্গে ইন্দুমতীকেও তাহার শুশ্ৰুষার জন্য যাইতে হইল। তিনি হিন্দু-মহিলা-বিদ্যালয়ে অতি উৎসাসের সহিত বিদ্যাশিক্ষা, করিতেছিলেন এবং সূৰ্ব্বজনেয় প্রিয় হইয়া রহিয়াছিলেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠের দারুণ পীড়ার কথা শুনিয়া' 'অস্থির হুইয়া উঠিলেন। রোগীর সেবা করা ইন্দুমতীর যেন জন্মগত সিদ্ধবিদ্যা ছিল। যে ইন্দু অপরে পীড়িত হইলে দাসীর মত তাহার সেবা করিতেন, সেই