পাতা:রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ.djvu/৯৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৬৪
রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ।

নিয়ম স্থাপিত হয়। লর্ড আমহার্ষ্টের পত্নী একজন মনস্বিনী ও সুলেখিকা স্ত্রীলোক ছিলেন। তিনি প্রতিদিনের ঘটনাবলীর দৈনিক লিপি লিখিয়া রাখিতেন। তদ্দ্বারা সে সময়কার অনেক কথা জানিতে পারা যায়। সেই দৈনিক লিপি হইতে উক্ত হত্যাকাণ্ডের নিম্নলিখিত বিবরণ উদ্ধৃত হইতেছেঃ—

 “A young man having died of cholera his widow resolved to mount the funeral pile. The usual preparations were made, and the licences procured from the magistrate. The fire was lighted by the nearest relations; when the flame reached her, however, she lost courage, and amid a volume of smoke and the deafening screams of the mob, tomtoms, drums &c. she contrived to slip down unperceived, and gained a neighbouring jungle. At first she was not missed; but when the smoke subsided, it was discovered she was not on the pile. The mob became furious and ran into the jungle to look for the unfortunate young creature, dragged her down to the river, put her into a dingy, and showed off to the middle of the stream, where they forced her violently overboard and she sank to rise no more”

 এই ঘটনাতে কলিকাতাবাসী ইংরাজগণ অতিশয় উত্তেজিত হইয়া উঠিলেন; এবং রামমোহন রায়ের দলস্থ ব্যক্তিগণ সতীদাহ নিবারণের জন্য আবার আন্দোলন উপস্থিত করিলেন। লর্ড আমহার্ষ্ট ব্রহ্মযুদ্ধে অনেকের, বিশেষতঃ বিলাতের প্রভুদিগের,অপ্রিয় হইয়াছিলেন, সুতরাং তিনি একেবারে এ প্রথা রহিত করিতে সাহসী হইলেন না; কিন্তু কতকগুলি কঠিন নিয়ম স্থাপন করিলেন। সেগুলি এই—(১ম) কোনও সহগমনার্থিনী বিধবাকে স্বামীর দেহের সঙ্গে ভিন্ন অন্যরূপে দগ্ধ করা হইবে না, বা অপর কোনও প্রকারে হত্যা করা হইবে না; (২য়) সহগমনার্থিনী বিধবাগণের অপরের দ্বারা মাজিষ্ট্রেটের অনুমতি পত্র লইলে চলিবে না, নিজে মাজিষ্ট্রেটের সমক্ষে উপস্থিত হইয়া অভিপ্রায় জানাইতে হইবে ও অনুমতি লইতে হইবে, (৩য়) সতীর সহমরণে সহায়তাকারী কোনও ব্যক্তি গবর্ণমেণ্টের চাকুরী পাইবে না; (৪র্থ) সহমৃতা বিধবার মৃতপতির কোনও সম্পত্তি থাকিলে তাহা গবর্ণমেণ্টের বাজেয়াপ্ত হইবে।